শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Saturday 24 January 2015

“বিশ্ব কোলাকুলি” দিবস

গত পরশু দিন রাস্তায় দেখি এক ভদ্রলোকের পিঠে একটা পোস্টার লাগানো। তাতে লেখা আছে, “বিনামূল্যে কোলাকুলি(free hug)।” অর্থাৎ কেউ চাইলে তাকে আলিঙ্গন করতে পারে। এজন্য কোন পয়সা দিতে হবে না। ঘটনা কি?

পরে শুনি ২১ জানুয়ারি নাকি “বিশ্ব কোলাকুলি” দিবস। তাই উনি মুফতে কোলাকুলি বিলিয়ে বেড়াচ্ছেন। কয়েকজন সুন্দরী রমণী তাকে ‘কোলাকুলি’ করার জন্য সারি ধরে দাঁড়িয়ে আছে । 
এমন একটি দিবস আছে তা আমার জানা ছিল না। পরে আরও ভালো করে বুঝতে পারলাম আমাদের জ্ঞাতি ভাইদের ‘কোলাকুলির’ অন-লাইন ছবি দেখে। আহা! যদি বাংলাদেশের দুই দলের সবাই মিলেমিশে এমন কোলাকুলি করতে পারতো! 



যাহোক কোলাকুলির গুণাগুণ পড়ে আমি তাজ্জব। এত বছরের মেডিক্যাল সায়েন্সে চলাফেরা করলাম; অথচ কোলাকুলির উপকারই ভালো করে দেখা হয় নাই। আমার মতো কেউ এ বিষয়ে অজ্ঞ থাকলে তাদের জন্য নীচে কোলাকুলির দশটা উপকার উল্লেখ করছিঃ

১) কোলাকুলি সুখী হওয়ার অব্যর্থ দাওয়াই। আমরা চেনা-অচেনা যার সঙ্গেই কোলাকুলি করি না কেন এর ফলে আমাদের শরীরে ‘অক্সিটোসিন’ নামে পরিচিত হরমোন নিঃসরিত হয়। আর এই হরমোন আমাদের মনে কুলকুল সুখের অনুভূতি জাগায়। 
২) কোলাকুলি করলে উদ্বেগ কমে। কারণ কোলাকুলি যেমন ‘অক্সিটোসিন’-এর পরিমাণ বাড়ায়, তেমন আমাদের শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসোলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
৩) শিশুদের খাবার এবং পানির মতো প্রচুর কোলাকুলির প্রয়োজন। গবেষকগণ বলছেন শিশুকে প্রচুর আলিঙ্গন না করলে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। 
৪) কোলাকুলি করলে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার উন্নতি হয়! 
৫) কোলাকুলি করলে প্লেয়ারদের খেলার মান বাড়ে। দেখা গিয়েছে যে দলের প্লেয়াররা বেশী বেশী কোলাকুলি করে তাদের দলের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
৬) কোলাকুলি করলে আমাদের ডাক্তারের কাছে কম যেতে হয়। কারণ কোলাকুলি থাইমাস গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
৭) একই কারণে কোলাকুলি করলে শরীরে জীবাণু সংক্রমণ কম হয়।    
৮) কোলাকুলি হৃদযন্ত্রকে সুস্থ-সবল রাখে। 
৯) যে দম্পতি বেশী বেশী কোলাকুলি করে তারা সুখী দম্পতি। 
১০) কোলাকুলি বিনা বাক্য ব্যয়ে প্রমাণ করে কারও প্রতি আমাদের ভালবাসা; আমরা কাউকে কতটা গুরুত্ব দেই।  

অতএব দুনিয়ার সুখ-শান্তি বাড়ানোর জন্য আমরা ‘কোলাকুলি’র ব্যাপারে যেন  কোন কৃপণতা না করি। জয় ‘কোলাকুলি’ দিবস। বিশ্ব ‘কোলাকুলি’ দিবস জিন্দাবাদ।