শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Saturday 25 April 2015

টাকার ময়লা হাতে

টাকা নাকি হাতের ময়লা । কিন্তু আসলে হাতের ময়লা টাকায় লাগে, নাকি টাকার ময়লা হাতে লাগে, সেটাও একটা প্রশ্ন নানারকম জীবাণু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ। আমরা যতই পরিচ্ছন্ন থাকি না কেন জীবাণু আমাদের পিছু ছাড়ে না। ঘরের দরজার হাতল থেকে শুরু করে বাথরুম পর্যন্ত সব জায়গাতেই কমবেশি জীবাণু থাকে। কিন্তু প্রতিবার মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে কিংবা রেখে আমরা কি হাত পরিস্কার করার কথা ভাবি

সম্প্রতি নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি ব্যাংকের ডলার পরীক্ষা করে বিভিন্ন নোটে গড়পড়তা ৩০০০ রকমের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়েছে। এসব ব্যাকটেরিয়ার কিছু স্বাভাবিকভাবে আমাদের ত্বকে বাস করে। গবেষকগণ অবাক হয়েছেন যে নোটের উপর এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যেগুলি সাধারণত আমাদের মুখে কিংবা মেয়েদের যোনীতে বাস করে। গরমকালের চেয়ে শীতকালে টাকার ওপর বেশী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এরমধ্যে নিউমোনিয়ার জীবাণুও রয়েছে। কিছু কিছু ডলারের নোটে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াও পাওয়া গিয়েছে। এ পর্যবেক্ষণের ফলাফল থেকে মনে হচ্ছে টাকা রোগ জীবাণু ছড়ানোর জন্য বেশ উপযুক্ত মাধ্যম; অতএব এসম্পর্কে সচেতন থাকার প্রয়োজন রয়েছে।


তথ্যসূত্রঃ এ বি সি নিউজ

Friday 24 April 2015

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের থ্রি-ডি প্রিন্টিং



বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ করার ক্ষমতা কমতে শুরু করে। ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্দান্ত প্রতাপশালী কোন রাজা-বাদশাহও এই  অমোঘ নিয়মের বাত্যায় ঘটাতে পারেননি। কিন্তু সম্প্রতি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের  থ্রি-ডি প্রিন্টিং এই ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।


প্রথমে খুব সাধারণভাবে শুরু হলেও এখন মানুষের হৃদপিণ্ড, লিভার কিংবা মস্তিষ্কের হুবহু   থ্রি-ডি প্রিন্টিং করা সম্ভব হচ্ছে। যে অঙ্গের  থ্রি-ডি প্রিন্টিং করতে হবে প্রথমে সিটি স্ক্যান কিংবা এমআরআইয়ের সাহায্যে ব্যক্তির অঙ্গটির মাপ নিয়ে তারই কোষ-কলা দিয়ে একটি রেপ্লিকা তৈরি করা হয়। ব্যক্তির নিজের কোষকলা ব্যবহার করার কারণে এ ধরণের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে শরীর সেটাকে আর প্রত্যাখ্যান করে না এবং অন্য কোন রকম প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে না।

Friday 3 April 2015

রাতের পেঁচা হওয়ার বিপদ

বেশী রাত জাগা ভালো নয়- এটা অনেক পুরনো কথা। কিন্তু গবেষণার মাধ্যমে আবার সেটা নতুন করে প্রমাণিত হল। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যারা অধিক রাত জেগে থাকেন তাদের ডায়াবেটিস এবং মেটাবলিক সিনড্রোম  বেশী হয়। কোরিয়ার ৪৭ থেকে ৫৯ বছর বয়সী ১৬২০ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যাদের রাত জাগার অভ্যাস আছে তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক সিনড্রোম বেশী হয়। এদের শরীরে  মাংসপেশীর পরিমাণ কমে যায় এবং  চর্বির পরিমাণ পরিমাণ বেড়ে যায়। পুরুষদের রাত জাগার সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক বেশী আর মেয়েদের রাত জাগার সঙ্গে মেটাবলিক সিনড্রোমের সম্পর্ক বেশী। অধিক রাত জাগলে উভয়ের শরীরে চর্বি বেড়ে যায়, তবে ছেলেদের পেশী শুকিয়ে যায় আর মেয়েদের পেটে চর্বির পরিমাণ অধিক বেড়ে যায়। যারা রাতে দেরী করে ঘুমায় তাদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বেশী, রাতের খাবার অনেক দেরী করে খায় এবং তাদের মধ্যে অলস জীবন যাপনের প্রবণতা বেশী থাকে। কোরিয়ার গবেষকগণ মনে করছেন আজকাল তরুণ-তরুণীদের  মধ্যে রাত জাগার প্রবণতা বেড়েছে। এটা ভবিষ্যতে তাদের জন্য নানা ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করবে। অতএব “Early to bed and early to rise, Makes a man healthy and wise” সেই পুরনো আপ্তবাক্যের প্রতিই আমাদের আস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।


তথ্যসূত্রঃ Yu JH, Yun C-H, Ahn JH, Suh S, Cho HJ, Lee SK, et al. Evening Chronotype is Associated with Metabolic Disorders and Body Composition in Middle-Aged Adults. The Journal of Clinical Endocrinology & Metabolism. 0(0):jc.2014-3754. PubMed PMID: 25831477.