বিষণ্ণতাঃ
আসুন কথা বলি
কার না মন খারাপ হয়? তবে কখনও না কখনও যে কাউকেই বিষণ্ণতা
পেয়ে বসতে পারে। অনেক সময় এটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। তা আর টুকটাক মন খারাপ নয়,
রীতিমতো বিষণ্ণতা রোগে পরিণত হয়। অনুমান করা হচ্ছে এখন দুনিয়ায় অন্তত ত্রিশ কোটি মানুষ
বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত। বিগত বছর দশেকের মধ্যে বিষণ্ণতার হার প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
এজন্য এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ঃ “বিষণ্ণতা-আসুন কথা বলি।” এটা
সকলের জন্যই প্রযোজ্য। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তিনটি গ্রুপকে বিশেষ ভাবে টার্গেট
করেছেঃ অল্প বয়সী কিশোর-কিশোরী, সন্তান ধারণক্ষম মহিলা(বিশেষ করে প্রসব পরবর্তী মায়েরা)
এবং যাদের বয়স ৬০ বছরের উপরে।
ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা সম্পর্কে সকলের যা জানা উচিতঃ
- বিষণ্ণতা একটি মানসিক সমস্যা। যে কোন বয়সে যে কোন আর্থসামাজিক পরিবেশে যে কেউ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হতে পারে।
- দারিদ্র, বেকারত্ব, দুর্ঘটনা-বিচ্ছেদ, শারীরিক অসুস্থতা, মাদক দ্রব্যে আসক্তি ইত্যাদি বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- বিষণ্ণতা মানসিক এবং শারীরিক কষ্ট দেয়, স্বাভাবিক প্রাত্যহিক কাজ-কর্ম করতে অনীহা জাগায়, জীবনকে এক দুঃসহ বোঝায় পরিণত করে। এর ফলে পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সম্পর্কের উপর গুরুতর প্রভাব পড়ে।
- সময়মত বিষণ্ণতার চিকিৎসা না করালে আক্রান্ত ব্যক্তির দৈনন্দিন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পারিবারিক ও সামাজিক কার্যক্রমে তার অংশগ্রহণ কমে যায়।
- অতি গুরুতর পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে কিংবা আত্মহত্যা করতে পারে।
- বিষণ্ণতা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা করা যায়। এর চিকিৎসা হিসেবে বিষণ্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ করতে হয় এবং বিষণ্ণতার অনেক ভালো ওষুধ রয়েছে।
- মানসিক রোগ সম্পর্কে সমাজের কুসংস্কার অনেক বিষণ্ণ রোগীর চিকিৎসা পাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
পুনশ্চঃ বিষণ্ণতা বিষয়ক
দুটি কৌতুক।
।। ১।।
বিষণ্ণতার উপকারিতা
কি?
বিষণ্ণ হলে রাতে ঘুমাতে
যাওয়ার আগে বিছানা পাততে হয় না। কারণ আপনি তখন
সব সময় বিছানাতেই শুয়ে থাকেন।
।।২।।
একদিন এক ভদ্রলোক ডাক্তারের
নিকট এসে বললেন,“ডাক্তার বাবু।আমি খুব ডিপ্রেশনে
ভুগছি। আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না। মনে হয় এই নিষ্ঠুর দুনিয়ায় আমি খুব একা। আমার প্রতি
এই জগতের বিন্দুমাত্র রহম নেই। প্লিজ আমাকে আপনি কিছু একটা ওষুধ দেন।” ডাক্তার মহাশয়
শুনে বললেন, “আপনার ওষুধ খুবই সোজা। শহরে আজ কৌতুক অভিনেতা মিসির সরকার এসেছেন। বিকেলে
উনার প্রোগ্রাম দেখে আসেন; সব ডিপ্রেশন কেটে যাবে।”
এই কথা শুনে রোগী আরও
কান্নায় ভেঙে পড়লেন এবং বললেন, “ডাক্তার বাবু আমিই সেই মিসির সরকার…।”