শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Friday 12 May 2017




আন্তর্জাতিক নার্স দিবস ২০১৭

আজ আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। অন্য কিছু নয়, কয়েকটি হিসেব আর একটি হাসির (আসলে দুঃখের) গল্প বলি।


  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে প্রতি ডাক্তারের জন্য ৩ জন নার্স থাকা দরকার। মানসম্মত সেবার জন্য হাসপাতালে সাধারণ ওয়ার্ডে নার্স ও রোগীর অনুপাত হওয়া উচিত ১:৪। অর্থাত ৪ জন রোগীর জন্য একজন নার্স থাকতে হবে।আর ক্রিটিক্যাল ওয়ার্ডের (আইসিইউ, সিসিইউ) ক্ষেত্রে নার্স ও রোগীর অনুপাত সমান সমান হওয়া উচিত। অর্থাৎ একজন রোগীর জন্য একজন নার্স থাকতে হবে।
  • ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে ১০ জন ডাক্তারের জন্য ১ জন নার্স ছিল। ২০১১ সালে তা হয়েছে প্রতি ৫ জন চিকিৎসকের জন্য ২ জন নার্স। এখন সামান্য কিছু বেড়েছে।
  • ভারতীয় নার্সিং কাউন্সিল মনে করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতি ৩জন রোগীর জন্য ১ জন নার্স থাকতে হবে; আর জেলা হাসপাতালে প্রতি ৫ জন রোগীর জন্য ১ জন নার্স থাকা প্রয়োজন। বাস্তবে অনেক সময় ৫০ জন রোগীর জন্য ১ জন নার্সও মিলে না।   

নার্স দিবসের ইচ্ছে পূরণ



হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড। ২০ টি বেড। কিন্তু ৪৭ জন রোগী ভর্তি আছে। যারা বিছানা পায়নি তারা ফ্লোরে কম্বল পেতে শুয়ে আছে। তাদের জন্য ৩ জন নার্স কাজ করছে। ইনচার্জ নার্স ওষুধ, কম্বল, খাবারের হিসেব-নিকেশ আর রোগী ভর্তি এবং ছুটির হিসেব করতে করতেই ঘেমে যাচ্ছে। মেজ আর ছোট নার্স দুইজন এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করছে। এর ভেতরেই এক ফাঁকে তারা দুপুরের খাবার খেতে বসেছে।

এমন সময় আলাদীনের দৈত্য (জুনিয়র) এসে হাজির।
দৈত্যঃ আজ নার্স দিবসের বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছি। আমি তোমাদের প্রত্যেকের একটি করে ইচ্ছে পূরণ করব। বল তোমরা কি চাও? ওরা তো এটা শুনে খুবই খুশী।

ছোট নার্সঃ আমি আমার গ্রামের নদীর পাড়ে খুব সুন্দর ছোট্ট একটা বাড়ী চাই। সেই বাড়ীতে একটা বাগান থাকবে, পুকুর থাকবে আর একটা মুরগীর ফার্ম থাকবে। আমি পুকুরের পাশে একটা দোলনায় বসে দোল খাব।
দৈত্য তথাস্তু বলার সঙ্গে সঙ্গে ছোট নার্স তার স্বপ্নের বাড়ীতে চলে গেলো। এবার মেজ নার্সকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার কি ইচ্ছে?”
মেজ নার্সঃ আমার নানা শহর ঘুরে বেড়ানোর শখ। আমাকে একখানা হাওয়াই গাড়ী এনে দাও যেন আমি নিমিষেই যেখানে মন চায় চলে যেতে পারি, বেড়াতে পারি।  
দৈত্য তথাস্তু বলার সঙ্গে সঙ্গে মেজ নার্স তার স্বপ্নের হাওয়াই গাড়ীতে চড়ে বেড়াতে  চলে গেলো।

এবার দৈত্য ইনচার্জ নার্সের দিকে তাকাল। বলল, “ইনচার্জ, তুমি কি চাও?” 
ইনচার্জ নার্সতো তার সহকর্মী দুজনকে চলে যেতে দেখে আঁতকে উঠলো। ওয়ার্ডে এখনও ৪৭ জন রোগীর ওষুধ আর ইনজেকশন দেওয়া বাকী।

ইনচার্জ নার্সঃ (কোন কিছু না ভেবেই) যত তাড়াতাড়ি পার ওদের দুজনকে লাঞ্চের পরেই আমার কাছে ফিরিয়ে আন।