শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Wednesday, 3 June 2015

কাজের ফাঁকে ফেসবুক দেখতে এত মজা কেন?

যারা সারাদিন কম্পিউটারে কাজ করেন তারা নিশ্চয় খেয়াল করেছেন কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা অন্যমনস্ক হয়ে যান। প্রকৃতপক্ষে ২০১১ সালে একটি জরীপে ৫৩% মানুষ স্বীকার করেছিলেন যে তারা প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা সময় অন্যমনস্ক হয়ে নষ্ট করেছেন। বর্তমান সময়ে অন্যমনস্ক হয়ে সময় ব্যয় করার একটি প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। অনেকে স্বীকার করতে না চাইলেও কাজের ফাঁকে ফেসবুক দেখার পেছনে কারণ রয়েছে। একটি নতুন পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে আমাদের বিশ্রামরত মস্তিস্ক অথবা মস্তিস্ক যখন একটু বিরতি চায় তখন তা আপনাআপনি এমন একটি অবস্থায় চলে যায় যা মূলত সামাজিক সম্পর্কের জন্য কাজ করে।
মজার বিষয় হচ্ছে আমরা যখন কোন কাজ করি না, তখনও কিন্তু মস্তিস্কের কার্যক্রম বন্ধ থাকে না। নানারকম এলেবেলে চিন্তা-ভাবনা মাথার ভেতরে চলতেই থাকে। ১৯৯০-এর দশকে এর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মিললেও; মস্তিস্কের এমন আচরণের কারণ জানা যায়নি। তবে দেখা যাচ্ছে অলস মস্তিস্ক সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ভাবতে বা চিন্তা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এজন্য আমরা কাজের ভিড়ে একটু ফুরসৎ পেলেই ফেসবুকের টাইম লাইনে পরিচিত বন্ধু-বান্ধব এবং স্বজনদের ছবি কিংবা কাজকর্ম দেখতে ভালোবাসি । মস্তিস্কের কোন অংশ আমাদের কোন ধরণের মানসিক অবস্থায় কাজ করছে তা দেখার জন্য আজকাল ফাংশনাল এমআরআই (fMRI) ব্যবহার করা হয়। এর সাহায্যে বিভিন্ন মানসিক পরিস্থিতিতে মস্তিস্কের কোন অংশ উদ্দীপিত হচ্ছে তা শনাক্ত করা যায়। এর ভিত্তিতে পরীক্ষা করেই গবেষকগণ এখন বলছেন, “মস্তিস্ককে নির্দিষ্ট কাজে ব্যস্ত রাখা একটি সক্রিয় প্রক্রিয়া। মস্তিস্ক যখনই ছুটি পায় তখন সে তার ডিফল্ট মোডে চলে যায়। আর সেটি আসলে সামাজিক কার্যকলাপে অংশ নেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এজন্যই ফেসবুকের প্রতি আমাদের এমন আকর্ষণ”। সে অর্থে এটাকে অস্বাভাবিক বলে গণ্য করা যাচ্ছে না। বরং কাজের ফাঁকেও যারা এমন করেন না তাদের মস্তিস্কের স্বাভাবিকতা নিয়েও অনেকে একটু আধটু সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
তথ্যসূত্রঃ  Spunt RP, Meyer ML, Lieberman MD. The default mode of human brain function primes the intentional stance. Journal of Cognitive Neuroscience. 2015 Jun; 27(6):1116-24.

No comments:

Post a Comment