শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Wednesday 24 August 2016

সামাজিকতার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহারে মেয়েরা এগিয়ে


 
অনেকের নিকট মনে হতে পারে যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকা মানেই সামাজিকভাবে আমরা যুক্ত। কিন্তু আসলে তা নাও হতে পারে। বরং মোবাইল ফোন ব্যবহার সামাজিক বিচ্ছিন্নতার বোধ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

দেখা যাচ্ছে সামাজিকতার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। জরীপে দেখা যায় ছাত্রীরা প্রতিদিন গড়ে ৩৬৫ মিনিট ফোনে সময় কাটায়। তারা প্রতিদিন ৬ টি কল রিসিভ করে এবং গড়ে ২৬৫ টি টেক্সট মেসেজ পাঠায়। পক্ষান্তরে ছাত্ররা প্রতিদিন গড়ে ২৮৭ মিনিট ফোন ব্যবহার করে। তারা মেয়েদের মতো দিনে ৬টি কল রিসিভ করলেও মাত্র ১৯০ টি টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদান করে। কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক প্রায় পাঁচশ’ ছাত্র-ছাত্রীর মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করে এমন তথ্যই দিয়েছেন।

ছাত্রীরা জানিয়েছে তারা ফোনে পিতামাতার সঙ্গে কথা বলতে পারলে মানসিকভাবে সবচেয়ে ভাল বোধ করে। কিন্তু অন্যান্য বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে টেক্সট মেসেজ বিনিময় করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তু ছাত্রদের বক্তব্য হচ্ছে ফোন কিংবা টেক্সট মেসেজ কোনটাই তাদের মানসিক নৈকট্যবোধ করতে সাহায্য করে না। তারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে কথা বলতেই পছন্দ করে।
 
তথ্যসূত্রঃ Lepp A, Li J, Barkley JE. College students' cell phone use and attachment to parents and peers. Computers in Human Behavior. 2016; 64:401-8.

Saturday 20 August 2016

ঘৃণার মনস্তত্ত্ব


এটা শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, অনেক সময় ছড়িয়ে পড়ে সমাজ থেকে সমাজে এবং দেশ থেকে দেশে।

আসলে ঘৃণার মনস্তত্ত্ব নিয়ে খুব বেশী গবেষণা হয়নি। স্মৃতি, চেতনা কিংবা ভালবাসা সম্পর্কে আমরা যত তত্ত্বকথা জানতে পারি, ঘৃণা সম্পর্কে তেমন জানা যায় না। নিঃসন্দেহে ঘৃণা একটি জটিল মানসিক আবেগ। কিন্তু ঘৃণার বশে আজকাল যেভাবে সহিংসতা ঘটছে তাতে অনেকেই মনে করছেন এ সম্পর্কে আরও গভীর পর্যবেক্ষণ করা দরকার।  
মজার ব্যাপার হচ্ছে যারা মনে তীব্র ঘৃণা পোষণ করেন, তারাও নিজেদের দয়ালু এবং সহমর্মী ব্যক্তি বলে ভেবে থাকেন। তাদের মানসিক বলয়ের এই দুই বিপরীত ধরণের আবেগ সমাজে পরিস্থিতি ভেদে তাদের ভূমিকা নির্ধারণ করে দেয়। এরকম ব্যক্তি একই সময়ে তার পরিচিতজনের জন্য যত্নশীল এবং সহানুভূতিপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে; কিন্তু এই একই ব্যক্তি অস্ত্রহাতে কোথাও গিয়ে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলছে। ব্যক্তির এই দ্বৈত আচরণের ব্যাখ্যা পাওয়া সহজ নয়। এরা মনের ভিতরে যে তীব্র ঘৃণার বিষ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে এবং যারা তার ঘৃণার কারণে সংঘটিত অপরাধের শিকার হচ্ছে, তার জন্য অনেক সময় কোন অনুশোচনাও বোধ করে না। বরং যাদের প্রতি সে ঘৃণা পোষণ করছে, তাদের যেকোনোভাবে নির্মূল করাকেই তার “পবিত্র কর্তব্য” বলে মনে করছে।  

ধরণ এবং মাত্রাভেদে এটা নানা রূপ ধারণ করতে পারে। জার্মান মনস্তত্ত্ববিদ এরিক ফ্রম ঘৃণার দুটি ধরণের কথা বলেছেন – একটি যুক্তিসঙ্গত ঘৃণা আর অন্যটি চরিত্র-নির্ধারিত ঘৃণা। যুক্তিসঙ্গত ঘৃণার তেমন ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কোন ব্যক্তির মন্দ কাজ কিংবা অপরাধকে আমরা যৌক্তিক কারণে ঘৃণা করতে পারি। কিন্তু চরিত্র-নির্ধারিত ঘৃণা একটু জটিল বিষয়। যেমন কেউ জন্মের পরে মন্ত্রণা কিংবা শিক্ষার কারণে যদি কোন গোষ্ঠী, বর্ণ, ধর্ম কিংবা জাতির মানুষকে ঘৃণা করে তাহলে সেটা একটি সমস্যার বিষয়ই বটে। এরকম ঘৃণার অনেক উদাহরণ এখন আমাদের সামনে। আমেরিকার মতো উন্নত দেশেও মুসলমান, মেক্সিকান, সমকামী কিংবা এশিয়ার মানুষ তীব্র ঘৃণার মুখে অসহায় বোধ করছে। নাৎসি চেতনার মতো উন্নাসিকতার ফলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অনুভুতি থেকে সৃষ্ট এই ঘৃণা অন্যদের মানবাধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করছে। কিন্তু তারা সেটা বোঝার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছে। চরিত্র-নির্ধারিত ঘৃণার বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে এটা দুনিয়াকে সরল দুই ভাগে বিভক্ত করে দেয়- আমরা শ্রেষ্ঠ; আর “তারা” আমাদের কেউ নয়, তারা কিছু নয়। এই “তাদের” প্রতি ঘৃণার মাত্রা এতই তীব্র এবং বিধ্বংসী যে “তাদের” নির্মূল করার জন্য যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়াই বৈধ বলে মনেপ্রাণে তারা বিশ্বাস করে। আর এভাবেই সৃষ্টি হচ্ছে সহিংসতা। এটা ব্যক্তি পর্যায়ে ঘটতে পারে, কিন্তু একসময়ে তা ছোটগণ্ডী ছাড়িয়ে বৃহত্তর গণহত্যায়ও রূপ নিতে পারে। তার উদাহরণ ভারত উপমহাদেশে বার বার দেখা গিয়েছে, দেখা গিয়েছে দুটি বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। 

প্রশ্ন হচ্ছে এই কাণ্ডজ্ঞানহীন ঘৃণা থেকে আমরা কিভাবে মুক্তি পাব?

সমাধান একটিই। যুগে যুগে মহৎ ব্যক্তিরা সেই একটি বিষয়ের কথাই বলে গিয়েছেন। মার্টিন লুথার কিং বলেছেন, এই সেদিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও বলেছেন- ঘৃণা এবং সহিংসতা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের একে অপরকে ভালবাসতে শিখতে হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয় ঘৃণার আগুণ থেকে দুনিয়াকে রক্ষা করার জন্য আমাদের হাতে কোন যাদু-মন্ত্র নেই। তবে দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসন করে শান্তি প্রতিষ্ঠার কিছু স্বীকৃত আচার-অনুশাসন আমাদের জানা রয়েছে। ঘৃণা একটি অর্জিত আবেগ; কেউ জন্ম থেকেই ঘৃণা নিয়ে এই দুনিয়ায় আসে না। তাই ঘৃণা দূর করা যায়। এরজন্য দরকার সর্বস্তরে একটি সহনশীল, নমনীয় এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল পরিবেশ গড়ে তোলা। ক্ষণস্থায়ী জীবনে এই ছোট পৃথিবীতে নানা বর্ণ,ধর্ম এবং মতবিশ্বাসের মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বসবাস করতে শিখতে হবে। আর সেজন্যই গনতান্ত্রিক মূল্যবোধের আপাতত কোন বিকল্প নেই।


ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ফলে আজ দুনিয়া ছোট হয়েছে সত্য; কিন্তু নতুন বিপদও হয়েছে। স্বাস্থ্য নয়, ব্যাধিই সংক্রামক-এটা যেমন সত্য; তেমন ভালবাসা নয়, ঘৃণাই সংক্রামক। আগে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘৃণা রপ্তানী করতে মাস কিংবা বছর লেগে যেত; কিন্তু এখন অন্তর্জালে মুহূর্তেই ঘৃণার আগুণ লেলিহান শিখার মতো দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মানুষের সামনে আজ এটা একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। তবে মানুষের প্রতি আস্থা হারানোর কিছু নেই। মানুষ মানুষের জন্যই। অতএব আমাদের আশাবাদী হতে হবে যে আমরা অবশ্যই ঘৃণামুক্ত ভালবাসার সহনশীল শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলতে পারবো।     

Monday 15 August 2016

কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম



সব রোগ রোগ নয়; অনেক সময় তা হয়ে দাঁড়ায় আমাদের জীবনের অংশ। কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম(computer vision syndrome) আসলে তেমন একটি সমস্যা। চিকিৎসা শাস্ত্রে বিশেষ কোন কারণে সৃষ্ট একাধিক লক্ষণ-উপসর্গের সমষ্টিকে সিনড্রোম বলা হয়। কোন কোন সিনড্রোমের নাম এসেছে যে অঙ্গে রোগটি হয় তার নাম থেকে। যেমন- কার্পাল টানেল সিনড্রোম। কব্জির সামনে কার্পাল টানেলে মিডিয়ান নার্ভ অতিরিক্ত চাপের কারণে এটা হয়। ডাউনস সিনড্রোমের নাম এসেছে ব্রিটিশ চিকিৎসক ডাঃ জন ল্যাঙ ডন ডাউন-এর নাম থেকে। ১৮৬২ সালে তিনি এই বংশগত রোগটির প্রথম বর্ণনা দিয়েছিলেন। আবার অনেক সিনড্রোমের নাম এসেছে সমস্যার বর্ণনা থেকে। যেমন- রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম। তবে অনেক সময় নামের সঙ্গে সিনড্রোমের বর্ণনার মিল নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। 
 
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভিধানে ছয়শ’য়ের বেশী সিনড্রোমের নাম রয়েছে। তার সঙ্গে অধুনা নতুন যুক্ত হয়েছে “কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম”। প্রশ্ন হচ্ছে কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম আসলে কি? আজকাল যারা দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার নিয়ে কাজ করেন তারা চোখের বিভিন্নরকম সমস্যার কথা বলেন; যেমন- চোখের পানি শুকিয়ে যায়, দৃষ্টি ঝাপসা মনে হয়, চোখে জ্বালাপোড়া করে ইত্যাদি।অনেকের সমস্যার তীব্রতা এতই বেশী হয় যে তারা আর কম্পিউটারে কাজ করতে পারেন না। 

অনুমান করা হচ্ছে পৃথিবীতে এখন ৭ কোটি মানুষের কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম হওয়ার ঝুঁকি আছে। লেখাপড়া, কর্মক্ষেত্র এবং বিনোদনের জন্য যেভাবে  কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে, তাতে ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। গবেষকদের মতে যারা প্রতিদিন দীর্ঘ সময় কম্পিউটার নিয়ে কাজ করেন তাদের মধ্যে শতকরা ৯০ জন এ ধরণের এক বা একাধিক লক্ষণ-উপসর্গের অভিযোগ করেন। এসব ছাড়া ঘাড়ে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, কোমরে ব্যথা ইত্যাদি ধরণের সমস্যা তো রয়েছেই। এসব কিছু মিলে কম্পিউটার নিয়ে বেশী কাজ করা অনেকের জন্য আসলেই এক সমস্যা।
    
কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম কেন হচ্ছে তা নিয়ে নানারকম ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে মোদ্দা কথা হচ্ছেঃ
কম্পিউটারের অক্ষর এবং ছবি পিক্সেল দিয়ে তৈরি। এর কিনারা ঝাপসা থাকে। এজন্য কাগজে ছাপা অক্ষর কিংবা ছবি পড়ার চেয়ে কম্পিউটারের অক্ষর এবং ছবি পড়তে চোখের ওপর বেশী চাপ পড়ে। ক্রমাগত এরকম অতিরিক্ত চাপের কারণে চোখের উপসর্গসমূহ সৃষ্টি হয়।
চোখের পলক পড়ার হার কমে যাওয়া আরেকটি সমস্যা। কেউ যখন একটানা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে থাকে তখন তার চোখের পলক পড়া কমে যায়। স্বাভাবিকভাবে প্রতি মিনিটে একজন মানুষের অন্তত ১৭ বার চোখের পলক পড়ে। কিন্তু মনোযোগ দিয়ে কম্পিউটারে কাজ করার সময় এটা কমে মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বারে নেমে আসে। চোখের পলক পড়া কমে গেলে চোখের পানির প্রবাহ কমে যায় এবং চোখে শুষ্কতা অনুভূত হয়। 

কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম প্রতিরোধ করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে; যেমন- 
কাজের সময় কম্পিউটারের খুব নিকটে বসা ঠিক নয়। সাধারণত চোখ থেকে কম্পিউটার স্ক্রিনের দূরত্ব অন্তত দুই ফুট হওয়া উচিত।
কম্পিউটার মনিটরের অবস্থানঃ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে কম্পিউটারের মনিটর চোখ থেকে ৪ থেকে ৮ ইঞ্চি নীচে থাকা উচিত। নীচের দিকে তাকিয়ে কাজ করলে চোখের দুই পাতার মধ্যে ব্যবধান কম থাকে। ফলে চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।
কম্পিউটার স্ক্রিনের কনট্রাস্টঃ এটা এমনভাবে সেট করা উচিত যেন চোখের ওপর কম চাপ পড়ে।উজ্জ্বল সাদা স্ক্রিনে কালো অক্ষরই এজন্য উপযুক্ত।
কম্পিউটারের মনিটরে আলোর ঝলমলে ভাব কমানোঃ ঘরে উজ্জ্বল আলো ব্যবহার না করলে এবং জানালা দিয়ে কম আলো আসতে দিলে, মনিটরের আলো স্তিমিত রাখলে এবং বিশেষ ধরণের চশমা পরলে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়াঃ এজন্য ২০-২০-২০ সূত্র অনুসরণ করা যেতে পারে। অর্থাৎ প্রতি ২০ মিনিট কাজ করার পরে ২০ সেকেন্ড বিরতি নিতে হবে এবং এই সময়ে ২০ ফুট দূরে তাকাতে হবে। এরসঙ্গে ঘাড় এবং কাঁধের হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে।
অক্ষরের ফন্ট বড় রাখাঃ অক্ষরের বড় ফন্ট ব্যবহার করলে চোখের ওপর চাপ কম পড়ে। 
চোখের পানি যেন শুকিয়ে না যায় সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজন মতো চোখের পলক ফেলতে হবে। তারপরেও যদি চোখ শুকিয়ে যায়, তাহলে চোখের জন্য কৃত্রিম চোখের পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এজন্য একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
নিয়মিত চোখের চোখের চেক-আপ করানো জরুরী। যাদের চোখে রি-ফ্র্যাকসনের সমস্যা আছে তাদের অবশ্যই সঠিক চশমা পরে কম্পিউটারে কাজ করতে হবে। এজন্য নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।



কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবের সঙ্গে সৃষ্ট নতুন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আমাদের এধরণের সমস্যার মুখোমুখি হওয়া নতুন নয়। একে অতিক্রম করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।   

Sunday 7 August 2016

ঘুমের মধ্যে শ্বাসের সমস্যা এবং স্ট্রোক


 
অনেকেরই ঘুমের সময় শ্বাসের সমস্যা হয়। আর এটাও ঠিক যে অনেক স্ট্রোক ঘুমের মধ্যেই ঘটে থাকে। সম্প্রতি বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে আসলে ঘুমের মধ্যে শ্বাসের সমস্যা থেকেই এসকল স্ট্রোক হয়ে থাকে।
মোট ২৯ টি সমীক্ষায় ২৩৪৩ জন রোগীর স্ট্রোক সম্পর্কে খুব গভীর পর্যবেক্ষণে দেখা যায় এদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনের ঘুমের সময় শ্বাসের সমস্যা ছিল। শ্বাসের সমস্যার মধ্যে রয়েছে - ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা(obstructive sleep apnea), সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং শ্বাসের অনিয়মিত ছন্দ (Cheyne-Stokes breathing)।  এধরণের শ্বাসের সমস্যার কারণে ঘুমের মধ্যে শ্বাসের গতি কমে যায় কিংবা সাময়িকভাবে দম নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। যাদের স্ট্রোক হয়েছে তাদের ঘুমের মধ্যে এরকম শ্বাস শ্লথ কিংবা থেমে যাওয়ার ঘটনা ঘণ্টায় পাঁচ কিংবা তার চেয়ে বেশী বার ঘটেছে।
 
আরও কিছু সমীক্ষাতেও শ্বাসের সমস্যার সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক চিহ্নিত হয়েছে। এজন্য অনেকেই এখন উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিসের মতো ঘুম এবং শ্বাসের সমস্যাকেও স্ট্রোকের ঝুঁকি হিসেবে গণ্য করছেন। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন এসকল সমীক্ষার ফলাফলে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই; তবে যাদের ঘুমের সময় শ্বাসের সমস্যা হয়, তাদের এবিষয়ে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।  

তথ্যসূত্রঃ Hermann DM, Bassetti CL. Role of sleep-disordered breathing and sleep-wake disturbances for stroke and stroke recovery.  Neurology. August 3,2016.