শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Saturday 19 November 2016

আজ পুরুষদের দিন - আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস ১৯ নভেম্বর ২০১৬



আজ পুরুষদের দিন। পৃথিবীতে পুরুষের অবস্থা এখন বড়ই করুণ। পুরুষ দিবস পালনের মূল  উদ্দেশ্য পুরুষের স্বাস্থ্য, পুরুষ ও মহিলাদের সম্পর্ক এবং সমাজ-সংসারে পুরুষের ইতিবাচক ভূমিকা সম্বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করা। এবারের পুরুষ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় - “পুরুষের আত্মহত্যা প্রতিরোধ”। 
শুধুমাত্র চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে পুরুষদের আত্মহত্যার হার মহিলাদের তুলনায় তিন গুণ বেশী। রাশিয়ায় মহিলা ও পুরুষের আত্মহত্যার অনুপাত ১ঃ ৬ অর্থাৎ মহিলাদের তুলনায় ৬ গুণ বেশী  পুরুষ আত্মহত্যা করে থাকে।  
সারা দুনিয়াতেই পুরুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন মহিলাদের তুলনায় খারাপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুসারে ২০১৫ সালে পুরুষের গড় আয়ু ৬৯ বছর  আর মহিলাদের জন্য তা ৭৪ বছর। পুরুষের স্বাস্থ্যের এই ধরণের দুঃখজনক পরিস্থিতি তাদেরকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিচ্ছে বলে অনেক মনে করছেন। বিচ্যুত উগ্র নারীবাদী প্রচারণার কারণে সমাজে পুরুষের ভাবমুর্তি দারুণভাবে বিকৃত  এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পরিবার, সমাজ এবং সামগ্রিকভাবে বৃহত্তর অঙ্গণে পুরুষের অবদান এবং ত্যাগের মূল্যায়ন নেই বললেই চলে। এজন্য এবারের পুরুষ দিবসের আহ্বান - পুরুষের সমস্যা সম্পর্কে জানুন, পুরুষকে ভালবাসুন এবং পুরুষের সমস্যার কথা শুনুন। 

এবার ৬০টি দেশে পুরুষ দিবস পালিত হবে। 

Friday 18 November 2016

ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং হৃদরোগ


অনেক দিন যাবত হৃদরোগের সঙ্গে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি নিয়ে একধরণের কুয়াশা বিরাজ করছে। এবার হয়ত সেটা দূর হবে। সম্প্রতি Annals of Internal Medicine  এ সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে। সমীক্ষায় হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সঙ্গে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি - এর  সম্পর্ক নিয়ে আদ্যোপান্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। এ সম্পর্কিত গাইডলাইনে সুপারিশকৃত পরিমাণের চেয়ে বেশী গ্রহণ না করলে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের জন্য ক্ষতিকর নয়। 

ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন (IOM) প্রতিদিন একজন বয়স্ক মানুষের জন্য ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৬০০ থেকে ৮০০ আইইউ ভিটামিন ডি গ্রহণের সুপারিশ করে থাকে। তবে ক্যালসিয়াম গ্রহণের মাত্রা ২০০০ থেকে ২৫০০ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন ডি সেবনের মাত্রা ৪০০০ আইইউ-এর বেশী হওয়া উচিত নয়। গবেষকগণ বলছেন সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে বেশী ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সেবন না করলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের জন্য বাড়তি ঝুঁকি সৃষ্টি হয়  না। 

হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি প্রয়োজনীয়। এ জন্য অনেকে মুড়ি-মুড়কির মত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সেবন করা থাকেন; সঙ্গত কারণে অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে হয়ত এটা আমাদের হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কিছু পর্যবেক্ষণে সেরকম ইঙ্গিতও পাওয়া গিয়েছে। বর্তমান সমীক্ষার মাধ্যমে এ বিতর্কের সমাধান হল। সুপারিশকৃত মাত্রায় ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সেবন করলে ভয়ের কিছু নেই। তবে বাড়তি ক্যালসিয়াম সেবনের তেমন কোন উপকারিতা নেই। কিন্তু ক্ষতিকর উপসর্গ দেখা দিতে পারে; যেমন - কিডনির পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য হয় ইত্যাদি।

বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন ওষুধ আকারে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সেবন করার চেয়ে প্রতিদিন খাবারের মাধ্যমে এটা গ্রহণ করা উত্তম। সামুদ্রিক মাছ, সাধারণ ছোট মাছ, দুধ, দই, পনির এবং সবুজ শাকসবজিতে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। নিয়মিত খাবারের মাধ্যমে ৭০০ থেকে ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া সহজ। এজন্য ট্যাবলেট আকারে সাপ্লিমেন্টারি ক্যালসিয়াম  গ্রহণ করা জরুরী নয়। 
মনে রাখতে হবে ভালো জিনিস বেশী গ্রহণ করাও সব সময় ভালো নয়। 

তথ্যসূত্রঃ 
Chung M, Tang AM, Fu Z, Wang DD, Newberry SJ. Calcium intake and cardiovascular disease risk: an updated systematic review and meta analysis. Ann Intern Med. 2016 Oct 25. [Epub ahead of print]

Kopecky SL, Bauer DC, Gulati M, et al. Lack of evidence linking calcium with or without vitamin D supplementation to cardiovascular disease in generally healthy adults: a clinical guideline from the National Osteoporosis Foundation and the American Society for Preventive Cardiology. Ann Intern Med. 2016 Oct 25. [Epub ahead of print]

Margolis KL, Manson JE. Calcium supplements and cardiovascular disease risk: what do clinicians and patients need to know? Ann Intern Med. 2016 Oct 25. [Epub ahead of print]

Anderson JJ, Kruszka B, Delaney JA, et al. Calcium intake from diet and supplements and the risk of coronary artery calcification and its progression among older adults: 10-year follow-up of the Multi-Ethnic Study of Atherosclerosis (MESA). J Am Heart Assoc. 2016;5.

Monday 7 November 2016

উদ্বেগজনিত মাথাব্যথা কমানোর সহজ চার উপায়




সকলেরই কমবেশী মাথাব্যথায় ভোগার অভিজ্ঞতা রয়েছে। নানা কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। অনেকেরই অতিরক্ত উদ্বেগ বা টেনশনের কারণে মাথাব্যথা হয় যা tension headache নামে পরিচিত। সাধারণত এধরণের মাথাব্যথা দুপুরের পরে শুরু হয়। এর তীব্রতা মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার হতে পারে। অনেকের মাথায় প্রচণ্ড চাপ অনুভূত হয় কিংবা মনে হয় যেন মাথাটি কেউ ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে রেখেছে। উদ্বেগের কারণে গলা, কাঁধ এবং মাথার পেশী অতিরক্ত সংকুচিত হওয়ার ফলে এই ব্যথা হতে পারে। যারা একটু নার্ভাস প্রকৃতির তাদের প্রতিনিয়ত উদ্বেগের কারণে মাথাব্যথায় ভুগতে দেখা যায়। যদিও এধরণের মাথাব্যথা ক্ষতিকর নয়; কিন্তু ঘন ঘন মাথাব্যথায় অনেকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
  
যাদের ঘন ঘন টেনশনজনিত মাথা ব্যথা হয় তারা সহজ কিছু নিয়ম মেনে চললে উপকার পেতে পারেনঃ

১। প্রাত্যহিক জীবনের কয়েকটি মৌলিক বিষয়ের প্রতি সচেতন থাকুন। যেমনঃ যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমাতে হবে, নিয়মিত খাওয়াদাওয়া করতে হবে এবং ক্লান্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করে এমন বিষয়গুলি এড়িয়ে চলতে হবে। 

২। শিথিলায়ন কৌশল প্রয়োগ করুন। শারীরিক এবং মানসিক শিথিলায়ন কৌশল টেনশনজনিত মাথাব্যথা লাঘবের জন্য খুব উপকারী। এর নিয়মিত অনুশীলন আপনার মাথা ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। স্কন্ধ এবং গলায় ঈষৎ গরম সেঁক দিলেও উপকার পাওয়া যায়। এসকল পেশীর ব্যায়াম করলে ব্যথা কমে যায়। 

৩। বায়োফিডব্যাকের সাহায্যে ব্যথার উপশম পাওয়া যায়। অবশ্য এরজন্য বায়োফিডব্যাক থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে হবে। 

৪। যাদের সাধারণ কৌশলগুলি প্রয়োগের পরেও মাথাব্যথা কমে না, তাদের ওষুধ সেবন করতে হবে। সাধারণ ব্যথানাশক এবং উদ্বেগনাশক ওষুধ সেবনেই অনেকে উপকৃত হতে পারেন। 


তবে এরপরেও যদি উপশম না হয়, তাহলে অবশ্যই মাথাব্যথাকে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। হয়ত  আপনার মাথাব্যথা সাধারণ উদ্বেগজনিত মাথাব্যথা নয়। এর পিছনে অন্য কোন জটিল কিংবা গুরুতর সমস্যা নিহিত থাকতে পারে। 

Sunday 6 November 2016

ভূতের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপন এবং অতঃপর



জাকিঃ হ্যালো। 
তুবাঃ হ্যালো, কে বলছেন?  
জাকিঃ আমার নাম জাকি। আমি আপনার সঙ্গেই পড়ি। 
তুবাঃ তাই, কিন্তু কোনদিন দেখেছি কিংবা নাম শুনেছি বলে মনে পড়ছে না তো। 
জাকিঃ হ্যাঁ, আমি নতুন এসেছি। কিন্তু সেদিন ক্লাসে আপনি আমার পেন ধার নিয়ে কিছু একটা লিখছিলেন। আমার অবশ্য আপনাকে পেন দিতে পেরে খুব ভাল লাগছিল। 
তুবাঃ হা হা । তাই নাকি? তা আমার ফোন নাম্বার কিভাবে পেলেন? 
জাকিঃ এটা আমার জন্য কোন ব্যাপার নয়। সবকিছু যোগাড় করার আমার নিজস্ব উপায় আছে। 
তুবাঃ তাই নাকি।  আপনি আসলে কেন ফোন করেছেন? 
জাকিঃ আপনার সঙ্গে আলাপ করার জন্য। 
তুবাঃ কি বিষয়ে আলাপ করতে চান? 
জাকিঃ বলতে দ্বিধা নেই আমার আপনাকে খুব ভাল লেগেছে। 
তুবাঃ কিন্তু আপনি তো আমাকে ঠিকমত চিনেনই না। 
জাকিঃ তা ঠিক। কিন্তু আমার জাস্ট মনে হয়েছে। আমার আপনাকে ভাল লাগছে। হয়ত আমার ভুল হতে পারে। একদিন কি আপনার সঙ্গে বসে কফি খাওয়া যাবে? 
তুবাঃ অবাক ব্যাপার। আপনাকে আমি চিনিনা, আপনিও আমাকে তেমন চিনেন না। আপনার সঙ্গে আমি খামাখা কফি খেতে যাব কেন? 
জাকিঃ সেটা সত্য। কিন্তু আমি বিষয়টা পরিষ্কার করে বলি। আমি সজ্জন ছেলে। সবাই বলে আমার সেন্স অব হিউমার খুব ভাল। আমি সুস্বাদু পিজা বানাতে পারি। আমি বাবা মায়ের খুব আদরের। 
তুবাঃ আপনার অন্য ভাইবোন আপনাকে ঈর্ষা করে না? 
জাকিঃ আমি তো একমাত্র সন্তান। যাহোক আমি গর্ব করতে চাই না। কিন্তু আমি ভাল গিটার বাজাতে পারি। আপনার মন জয় করার জন্য এগুলোই কি যথেষ্ট না? 
তুবাঃ হা হা । আপনার সেন্স অব হিউমার আসলেই ভাল। 
জাকিঃ তাহলে আমি চেষ্টা শুরু করি। আমি কিন্তু সবচেয়ে ভাল কফির দোকান কোনটা জানি। 
তুবাঃ জিমির দোকানের কথা বলছেন? 
জাকিঃ হ্যাঁ অবশ্যই।  আপনি যদি সাবান গোলা পানির মত তরল বস্তুকে কফি মনে করেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। 
তুবাঃ তাহলে কোনটা?
জাকিঃ সবচেয়ে ভাল হচ্ছে রিভার ভিউ। 
তুবাঃ কিন্তু ওদের কফি তো পোড়া তেতো। 
জাকিঃ এটা কি আমাদের প্রথম ঝগড়া? আমার খুব মজা লাগছে। 
তুবাঃ হা হা। 
জাকিঃ রিভার ভিউয়ের কফি আসলেই ভালো। তবে আপনি যেটার কথা বলছেন আমি সেটার কথা বলছি না। এই রিভার ভিউ আসলে শহর থেকে একটু বাইরে। আমার খাওয়া কফির মধ্যে এ পর্যন্ত ওটাই সেরা। 
তুবাঃ ঠিক আছে। ভালো কথা।  
জাকিঃ আসেন এরকম একটা ঝগড়ার পরে পরিবেশটা একটু শান্ত করা যাক। একটা খেলা করা যাক। 
তুবাঃ কি খেলা? 
জাকিঃ বলেন তো দেখি আমার সম্পর্কে কোনটি সত্য নয়? আমাকে হাঙর কামড় দিয়েছে। আমার চোখের রং নীল। আমার বাবা নভোচারী।
তুবাঃ  হুম। আমার মনে হয় আপনার বাবা নভোচারী নয়। অবশ্য আপনাকে হাঙর কামড় দেওয়ার সম্ভাবনাও কম। 
জাকিঃ গোল্লা। পুরোই রসগোল্লা। দেখেছেন আপনারা মেয়েরা ছেলেদের চোখের দিকে কখনও খেয়ালই করেন না। আমার চোখ আসলে কাজল কালো।  
তুবাঃ  হা হা। তার মানে হাঙর আপনাকে কামড় দিয়েছিল? 
জাকিঃ ঠিক তাই। আমি বাবার সঙ্গে একদিন সাগরে সাঁতার কাটছিলাম। তখন এক বিশাল হাঙর আমাকে তাড়া করেছিল। আমি বেচারাকে মানা করেছিলাম। দেখি আমার দিকে তেড়ে আসছেই। কি আর করা দিলাম হাঙরের নাকে এক প্রচণ্ড ঘুষি। সেই ঘুষি খেয়ে হাঙর কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গেল। 
তুবাঃ  হা হা । আপনি বানিয়ে বানিয়ে ভালোই বলতে পারেন। 
জাকিঃ হা হা । আসল ঘটনা এত বীরত্বের না। আমার দিকে একটা হাঙর তেড়ে আসছিল বটে।  তা দেখতে পেয়েই আমি যত জোরে পারি সাঁতার দিতে শুরু করি। তারপর পানি থেকে উঠেই দিলাম ভোঁ দৌড়। অবশ্য হাঙর আমার সাঁতরানোর  বোর্ডটা কামড় দিয়ে ভেঙে ফেলেছিল। 
তুবাঃ  ও মা গো। কি ভয়ংকর ব্যাপার।  
জাকিঃ হ্যাঁ আসলেই ভয়ংকর। খুব ভয় পেয়েছিলাম। আপনি কখনও এরকম ভয় পান নি? 
তুবাঃ  আমি গত বছর গাড়ী অ্যাকসিডেন্ট করেছিলাম। আমার হাত ভেঙে গিয়েছিল আর আমার সঙ্গের বান্ধবীর নাকের হাড় ভেঙেছিল। অল্পের জন্য আমরা জানে বেঁচে গিয়েছি। 
জাকিঃ বুঝতে পারছি। খুব ভয় পেয়েছিলেন। আপনি গাড়ী ড্রাইভ করছিলেন? 
তুবাঃ  হ্যাঁ। আমি ড্রাইভ করছিলাম। কিন্তু দোষ ছিল উলটো দিক থেকে আসা গাড়ীটার। 
জাকিঃ খুবই দুঃখজনক। এরকম একটা ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আপনার জন্য মানানসই না। 
তুবাঃ  না এখন আমি ঠিক আছি। কিন্তু আপনার বাবা তাহলে নভোচারী? 
জাকিঃ হ্যাঁ। কিন্তু আমি আজ আমার বাবাকে নিয়ে আপনার সঙ্গে গল্প করব না। আপনার সঙ্গে কফি খাওয়ার দিন এসব নিয়ে গল্প হবে। 
তুবাঃ  ঠিক আছে। 
জাকিঃ তাহলে কবে আমাদের দেখা হচ্ছে? 
তুবাঃ  একটু ভেবে বলব। 
জাকিঃ না না । ভাবাভাবির কিছু নেই। আমাকে এত সাসপেন্সের ভেতরে রাখবেন না। আমার হার্ট খুব দুর্বল। আমাকে নিয়ে বেশী খেলবেন না। 
তুবাঃ  আচ্ছা। যাবো। 
জাকিঃ সত্যি? মানে আমি বলতে চাচ্ছি আপনি যাবো বলেছেন। যাবো মানে যাবো। পরে যেন মত বদল করবেন না। আর আমি বলতে চাই, আপনি সত্যি দারুণ। 
তুবাঃ  আপনি একটু পাগল গোছের। ঠিক না? 
জাকিঃ আমরা সবাই কি একটু একটু পাগল না? যাহোক সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবারে দেখা হচ্ছে।  
তুবাঃ  সব ঠিক থাকবে না কেন?  
জাকিঃ আমি কিন্তু আপনার চোখের রঙ সেদিন ভালো করে দেখবো। 
তুবাঃ  আপনি আসলেই একটা পাগল। 
জাকিঃ বেশী তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত হয়ে যাচ্ছে না কি? 
তুবাঃ  হা হা। 
জাকিঃ ঠিক আছে শুক্রবারে বিকেলে দেখা হবে। 

তুবা শুক্রবারে রিভার ভিউয়ে গিয়েছিল। নদীর পাড়ে এটি একটু নির্জন এলাকায়। ক্যাফের বাইরে একটি বেঞ্চে সে বসেছিল। হঠাৎ তার মনে হল কেউ একজন এসে তার পাশে বসলো। কিন্তু আশেপাশে কাউকে সে দেখতে পেল না। শুধু শুনতে পেল একজন তাকে বলছেঃ ভয় পাবেন না। আমি জাকি। কফির অর্ডার দিয়ে এসেছি। এখনই নিয়ে আসবে। 

কিছুক্ষণ পরে ক্যাফের ছেলেটি দুকাপ কফি হাতে এসে দেখতে পেল বেঞ্চের ওপরে তুবা অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। 


Wednesday 2 November 2016

অ্যালকোহলে মেয়েরা আর পিছিয়ে নেই



পশ্চিমা দেশগুলিতে মেয়েরা পুরুষদের মতোই অ্যালকোহল পান করতে শুরু করেছেন ৷ ফলে এতদিন মদ্যপানে নারী-পুরুষের যে ব্যবধান ছিল, তার অবসান হচ্ছে। গত শতাব্দীর মাঝামাঝিতে পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে গড়ে প্রায় দ্বিগুণ মদ্যপান করতেন ৷ কিন্তু মহিলারা প্রতি দশকে ছয় শতাংশ করে এগিয়ে পুরুষদের প্রায় ধরে ফেলেছেন, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে মদ্যপানে পুরুষদের পিছনে ফেলে দিয়েছেন৷
সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এই পর্যবেক্ষণের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ৷ জরিপের তথ্য এসেছে ৬৮টি সমীক্ষা থেকে ৷ ১৯৪৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষের মদ্যপানের অভ্যাস নিয়ে সমীক্ষা সম্পন্ন হয় ৷ গবেষকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েল্স ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল ড্রাগ অ্যান্ড অ্যালকোহল রিসার্চ সেন্টারের টিম স্লেড ৷
মদ্যপান ও মদ্যপান সংক্রান্ত অসুখবিসুখ চিরকাল পুরুষদের বিষয় বলে গণ্য হয়ে এসেছে৷ কিন্তু বর্তমান সমীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, কমবয়সি মহিলারাই মদ্যপান কমানো অভিযানের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ ৷

পুরুষরা যে মহিলাদের চেয়ে কম মদ্যপান করে থাকেন এবং সেই ব্যবধান যে এখন কমে আসছে, তার অর্থ এই নয় যে, পুরুষরা কম মদ্যপান করছেন ৷ বরং মহিলাদের বেশি মদ্যপান করাই এই ব্যবধান কমে আসার কারণ ৷ অবশ্য এশিয়া মহাদেশে মদ্যপান সাধারণভাবে কম। এখানে মদ্যপানে স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে ব্যবধান এখনও বর্তমান ৷ অন্যদিকে সারা বিশ্বে অ্যালকোহল সেবন বিস্তার ও পরিমাণ, উভয় বিচারেই বেড়ে চলেছে ৷