শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Sunday 31 January 2016

হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনের বুস্টারডোজ কি জরুরী?

হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নেওয়ার ৩০ বছর পরে বুস্টার ডোজের আর দরকার নেই। দুনিয়াজুড়ে সার্বজনীন টীকা দানের সাফল্য সম্পর্কে আমরা সকলেই জানিকিন্তু হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন  দিলে প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন কার্যকর থাকে সে সম্পর্কে তেমন বিস্তারিত তথ্য জানা যায় নামূলত এতদিন হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা ২২ বছর পর্যন্ত জানা ছিল। সম্প্রতি মার্কিন রোগ প্রতিরোধ কেন্দ্রের গবেষকদল আর্কটিক গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে আলাস্কার ১৫৭৮ জন অধিবাসীর ওপর ৩০ বছর পর্যবেক্ষণের ফলাফল জানিয়েছেন। ১৯৮১ সালে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন শুরু হওয়ার পরেই তাদের টীকা দেওয়া হয়েছিল। এরপর ১১ বছর ধরে প্রতিবছর ধরে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে কেমন অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। পরবর্তীতে ১৫ এবং ২২ বছরের মাথায় আবার তা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২২ বছর পরেও ৬০% অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সুরক্ষাকারী মাত্রার অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব দেখা গিয়েছে।আর বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের হিসেবে ধরলে ৯৩%। কিন্তু কারও নতুন করে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমিত হয়নি।নতুন ফলাফলে তাদের মধ্য থেকেই ৪৩৫ জনের রক্ত ৩০ বছর পরে পরীক্ষা করা হয়েছে। সার্বিক বিচারে দেখা যাচ্ছে যাদের প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে যথাযথ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে ৩০ বছর পরেও তাদের মধ্যে ৯০% টীকা গ্রহণকারীর রক্তে প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট রয়েছে। এজন্য গবেষকগন মনে করছেন হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নেওয়ার অন্তত ৩০ বছর পরেও বুস্টার ডোজ নেওয়ার তেমন কোন গুরুত্ব নেই। উল্লেখ্য ১৯৮২ সাল থেকে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে ১৯৯২ সাল থেকে রিকমবিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তিতে ভ্যাকসিন তৈরি শুরু হয়। ২০১৪ সাল নাগাদ ১৮৪টি দেশের সম্প্রসারিত টীকাদান কর্মসূচীতে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং অন্তত শতকরা ৮২জন শিশুকে এই টীকা দেওয়া হয়েছে।   

তথ্যসূত্রঃ Bruce MG, Bruden D, Hurlburt D, Zanis C, Thompson G, Rea L, et al. Antibody Levels and Protection after Hepatitis B Vaccine: Results of a 30-Year Follow-up Study and Response to a Booster Dose. Journal of Infectious Diseases. January 21, 2016.

Thursday 21 January 2016

যিকা ভাইরাসঃ নতুন আপদ

দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ব্যাপকভাবে একটি নতুন ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এর নাম যিকা ভাইরাস(Zika virus)আর এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়বে এমন আশংকায় সকলেই নড়ে-চড়ে বসেছেন। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে, গত দুই দশকে সন্ধিপদ প্রাণীবাহী (arthropod-borne viral diseases)চার ধরণের ভাইরাস অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এইসকল দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। যেমনঃ নব্বইয়ের দশকে ডেঙ্গি (dengue), ১৯৯৯-এ ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস(West Nile virus), ২০১৩ সালে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস(chikungunya); আর বর্তমান আপদ যিকা ভাইরাস।
যিকা ভাইরাস ১৯৪৭ সালে সর্বপ্রথম শনাক্ত হয়েছিল উগান্ডায়। দীর্ঘদিন যাবত এর অস্তিত্ব শুধুমাত্র আফ্রিকা এবং এশিয়ায় বিষুবরেখার আশেপাশের দেশগুলিতেই সীমাবদ্ধ ছিল।এই ভাইরাসের বিচরণ মূলত বানরজাতীয় প্রাণী এবং এডিস মশার মধ্যে সীমিত ছিল। একদশক আগে আফ্রিকার গবেষকগণ লক্ষ্য করলেন যিকা ভাইরাস চিকুনগুনিয়ার মতই দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। উল্লেখ্য চিকুনগুনিয়া ভাইরাসও এডিস মশাবাহিত। তবে ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস কিউলেক্স মশা দিয়ে ছড়িয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে পীত জ্বর (yellow fever), ডেঙ্গি এবং চিকুনগুনিয়া ভাইরাস এডিস মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আর সেই মিছিলে সামিল হয়েছে এতদিনের প্রায় অপরিচিত যিকা ভাইরাসও।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যিকা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ-উপসর্গ অনেকাংশে ডেঙ্গি জ্বরের মতই। এরফলেও জ্বর হয়, মাংসপেশীতে ব্যথা হয়, চোখে ব্যথা হয়, অত্যন্ত দুর্বল অনুভব হয় এবং ত্বকে লাল লাল দানা কিংবা ফুসকুড়ি উঠতে পারে। যিকা ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশের পরে ডেঙ্গির মতো ইমিউন প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করলেও; বিগত ৬০ বছরের পর্যবেক্ষণে কখনও যিকা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে ডেঙ্গির মত রক্তক্ষরণ হওয়ার নমুনা দেখা যায়নি। তবে ফ্রেঞ্চ পলিনেসিয়ায় যিকা সংক্রমণের কারণে ব্যাপকভাবে গিলেন বার সিনড্রোমসহ (Guillain–Barré syndrome)অন্যান্য স্নায়ুরোগ হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু সবাইকে যেটি সবচেয়ে আতঙ্কিত করেছে ব্রাজিলে নবজাত শিশুদের ব্যাপকভাবে ছোট মাথা বা মাইক্রোসেফালি(microcephaly)হওয়ার ঘটনা। এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে ২০১৪ সালের চেয়ে ২০১৫ সালে ব্রাজিলে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে মাইক্রোসেফালির হার ২০ গুণ বেশী হয়েছে।অক্টোবর ২০১৫ থেকে জানুয়ারী ২০১৬-এর মধ্যে ৩৫০০ শিশু মাইক্রোসেফালি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত শিশুর মাথা তুলনামূলকভাবে ছোট এবং তাদের মস্তিস্কের আকারও ছোট হয়। পরবর্তীতে তাদের মৃগী ব্যারাম সহ নানাধরণের প্রতিবন্ধীত্ব দেখা দেয়। আর এরজন্য গর্ভকালে মায়েদের যিকা ভাইরাস সংক্রমণকে দায়ী মনে করা হচ্ছে।এরই ধারাবাহিকতায় মার্কিন রোগ প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ(CDC) গর্ভধারিণী মহিলাদের দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ১৪টি দেশে সবধরনের ভ্রমণ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। এই ১৪টি দেশ হচ্ছেঃ ব্রাজিল, কলম্বিয়া, হাইতি, হন্ডুরাস, এল সালভেদর, ফেঞ্চ গায়ানা, গুয়েতেমালা, মারটিনিক, মেক্সিকো, পানামা, প্যারাগুয়ে, সুরিনাম, ভেনেজুয়েলা এবং পুর্টেরিকো 
বলাবাহুল্য ডেঙ্গির মতো যিকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখনও কোন টীকা আবিস্কার হয়নি। ডেঙ্গির চিকিৎসা যেমন শুধু উপসর্গ উপশমের মধ্যে সীমিত, যিকা ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসাও উপসর্গভিত্তিক। যিকা ভাইরাসের ক্ষতিকর জটিলতা থেকে মুক্ত থাকার একমাত্র উপায় এটা প্রতিরোধ করা। আর তা মূলত এডিস মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা। অতএব ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য এডিস মশার বিরুদ্ধে আমরা যে সকল পদক্ষেপ নেই, যিকা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্যও একই ধরণের পদক্ষেপ নিতে হবে।         
তথ্যসূত্রঃ
1.       Fauci AS, Morens DM. Zika Virus in the Americas - Yet Another Arbovirus Threat. The New England journal of medicine. 2016 Jan 13. PubMed PMID: 26761185.
2.       http://www.cdc.gov/media/releases/2016/s0315-zika-virus-travel.html (Accessed on 19 January 2016)


Sunday 17 January 2016

ধূমপান ছাড়ার জন্য ই-সিগারেট কোন কাজের নয়

আজকাল আমরা সবক্ষেত্রেই ইলেকট্রনিক কিংবা ডিজিটাল জিনিস পছন্দ করি ধূমপান শরীরের জন্য ক্ষতিকর দিনে দিনে এর বিরুদ্ধে প্রচারণা বেশ তীব্র হয়ে উঠেছে কিন্তু সিগারেটের ব্যবসা বড়ই লাভজনক অতএব নতুন কলাকৌশলের উদ্ভাবনা বাজারে এসেছেঅ্যানালগসিগারেটের পরিবর্তে -সিগারেট বলা হল যারা ধূমপান ছেড়ে দিতে চান, তাদের আর ভাবতে হবে না চিরতরে ধূমপান ছাড়ার আগে কয়েকদিন -সিগারেট পান করলে ধূমপান ছাড়া কোন ব্যাপারই নয়ব্যবসায়ীদের এমন প্রচারণায় আস্থা রেখে অনেকেই ধূমপান ছাড়ার আশায় -সিগারেট ধরেছেন কিন্তু -সিগারেট আর তাদের ছাড়ছে না সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে -সিগারেট ধূমপান ছাড়তে কোন সহায়তা তো করেই না; বরং যারা -সিগারেট পান করছেন তাদের ধূমপান ছাড়ার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের চেয়ে ২৮% কমঅথচ ই-সিগারেটের ক্ষেত্রে ধূমপানের প্রচলিত আইন প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ ধূমপান নিষিদ্ধ এলাকাতেও যে কেউ ই-সিগারেট পান করতে পারে। এজন্য এখন সকলেই মনে করছেন ধূমপানের জন্য প্রচলিত সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা ই-সিগারেটের জন্যও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।


তথ্যসূত্রঃ Kalkhoran S, Glantz SA. E-cigarettes and smoking cessation in real-world and clinical settings: a systematic review and meta-analysis. Lancet Respir Med 2016; published online Jan 14.    

Thursday 14 January 2016

প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের যত দোষ

ওষুধ হিসেবে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের সফলতার কোন তুলনা নেই কয়েক দশক ধরে এটা প্রেসক্রিপশনে সর্বাধিক লেখা ওষুধ। মূলত দুটো কারণে এটা হয়েছেঃ ডিসপেপসিয়ার চিকিৎসায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত; আর হৃদরোগে অ্যান্টিপ্লাটিলেট ওষুধের সঙ্গে পাকস্থলি থেকে কোন ধরণের রক্তক্ষরণ প্রতিরোধের জন্য এটা অবশ্যই ব্যবহার করা হয়। সুলভ এবং সহজলভ্য হওয়ার কারণে অনেকেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এটা ব্যবহার করে থাকেন। বাংলাদেশসহ অনেক দেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়াও এটা দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। এতদিন মনে করা হতো প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর খুবই নিরাপদ ওষুধ; এর তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু এখন বাস্তবতা আর সে রকম মনে হচ্ছে না। দিনে দিনে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে চলেছে। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে ক্রনিক কিডনি রোগের সমস্যা। সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘসময় প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করলে ক্রনিক কিডনি রোগ হতে পারে। Atherosclerosis Risk in Communities(ARIC) study-তে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০ হাজারের বেশী রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে এদের মধ্যে যারা প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করেছেন তাদের মধ্যে ক্রনিক কিডনি রোগের হার ৫০ শতাংশ বেশী। অন্যান্য নির্ভরযোগ্য পর্যবেক্ষণ থেকেও দেখা যাচ্ছে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করলে আসলেই কিডনির সমস্যা বেশী হয়ে থাকে। প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করলে তুলনামূলকভাবে স্বল্পমেয়াদী কিডনির সমস্যাও বেশী হয় এবং রক্তে ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। মনে করা হচ্ছে এই দুটি কারণেই শেষ পর্যন্ত ক্রনিক কিডনি রোগের সৃষ্টি হচ্ছে
এ পর্যন্ত প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করার ফলে যে সকল গুরুতর সমস্যার নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে তার পূর্ণ তালিকা হচ্ছেঃ ১) ক্রনিক কিডনি রোগ হওয়ার ৫০% সম্ভাবনা বেড়ে যায়   (Lazarus et al, 2015) ২) স্বল্পমেয়াদী কিডনি রোগের সম্ভাবনা ১৫০% বেড়ে যায় (Antoniou et al, 2015) ৩)অ্যাকিউট ইন্টারস্টিসিয়াল নেফ্রাইটিসের প্রকোপ দ্বিগুণ কিংবা তিন গুন বৃদ্ধি পায় (Antoniou et al, 2015) ৪) রক্তে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি বা হাইপোম্যাগনেসিমিয়া  হওয়ার প্রবণতা ৪৩% বেড়ে যায় (Cheungpasitporn et al, 2015) ৫) হার্ট অ্যাটাকের হার ১৬% বেশী এবং  হৃদরোগের কারণে মৃত্যুহার দ্বিগুণ হওয়ার প্রমাণ রয়েছে (Shah et al, 2015) ৬) অধিক হারে ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিলি(Clostridium difficile) নামে পরিচিত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটার হার ৭৪% বেড়ে যায় (Kwok et al, 2012) ৭) নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা ৫% থেকে ৩৪% বেড়ে যায় (Filion et al, 2014 এবং Eom et al, 2011) এবং ৮) হাড় ভেঙ্গে যাওার প্রবণতা ৩৩% বেড়ে যায় (Zhou et al, 2015)
এত রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়ার ফলে গবেষকগণ এখন মনে করছেন প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করার সময় এসেছে। 

তথ্যসূত্রঃ
১) Lazarus B, Chen Y, Wilson FP, et al. Proton pump inhibitor use and the risk of chronic kidney disease. JAMA Internal Medicine. 2016:238-46.
২) Schoenfeld A, Grady D. Adverse effects associated with proton pump inhibitors. JAMA Internal Medicine. 2016:1-3.

Sunday 3 January 2016

২০১৫ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞান নতুন কি পেলো ?

২০১৫ সালে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নান ধরণের পরিবর্তন এবং নতুন নতুন আবিস্কার সংযোজিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দশটিঃ

(১) SPRINT: উচ্চ রক্তচাপ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে আরও জীবন রক্ষা করা সম্ভব
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আরও কঠোর হলে হৃদরোগের প্রকোপ এবং আরও মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। ২০১৫ সালে এ সম্পর্কিত Systolic Blood Pressure Intervention Trial (SPRINT)-এর গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৪০ মিমি পারদচাপের নীচে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু Systolic Blood Pressure Intervention Trial (SPRINT)-এ অংশগ্রহণকারীদের সিস্টোলিক রক্তচাপ ১২০ মিমি পারদচাপের নীচে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ৫০ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশী ছিল। পর্যবেক্ষণের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যাদের সিস্টোলিক রক্তচাপ সবসময় ১২০ মিমি পারদচাপের নীচে রাখা সম্ভব হয়েছে তাদের মধ্যে হৃদরোগের প্রকোপ ৩০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ২৫ শতাংশ কম হয়েছে। মার্কিন জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (National Institutes of Health) এই গবেষণার অর্থ যোগান দিয়েছে। গবেষণার ফলাফল আশাতিরিক্ত সফল হওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। গবেষকদল মনে করছেন ভবিষ্যতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের টার্গেট নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে।

(২) ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোমের নতুন নাম
কথায় বলে নামে কি আসে যায়? কিন্তু The Institute of Medicine (IOM) দীর্ঘ মেয়াদী অবসাদ বা ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোমের বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত ইনিস্টিটিউট অব মেডিসিনের প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে এটা আসলেই একটি “মারাত্মক জটিল বহু-আঙ্গিক ব্যাধি” এবং এই রোগ শনাক্ত এবং চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের আরও যত্নশীল হওয়া উচিত। রিপোর্টে এর নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছে “systemic exertion intolerance disease”।
ইনিস্টিটিউট অব মেডিসিন মনে করছে এটা আসলে রোগীদের কল্পনাপ্রসূত কোন রোগ নয়। বাস্তবেই এটা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণ এবং উপসর্গ সৃষ্টি করে। এজন্য এর চিকিৎসার বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার। অনেক দেশে এ রোগের নাম মায়ালজিক এনসেফালো মায়েলাইটিস (myalgic encephalomyelitis)।

(৩)আইসিডি-১০ প্রবর্তিত
চিকিৎসা বীমার জন্য বিভিন্ন রোগের নাম উল্লেখ করতে এতদিন  আই সি ডি-৯ ব্যবহার করা হতো। ২০১৫ সালে এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন প্রবর্তিত আইসিডি-১০ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এখানে প্রায় ৭০,০০০ রোগের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আইসিডি-৯-এর চেয়ে এ সংখ্যা ৫ গুণ বেশী। এজন্য অনেকের মনে আশংকা ছিল আদৌ আইসিডি-১০ ব্যবহার করা সম্ভব হবে কিনা। কিন্তু সকলের শঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে সাফল্যের সঙ্গে এটা ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে চিকিৎসা বীমার দাবী এবং অর্থ উত্তোলন আরও সঠিক এবং সহজ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।বলাবাহুল্য আমাদের দেশে রোগ নির্ণয় এবং তার কোডিংয়ের জন্য এখনও আইসিডি কোড ব্যবহারের কোন প্রচলন নেই। অদূর ভবিষ্যতে তা হবে কিনা, সে বিষয়ে কোন দিক নির্দেশনাও দেখা যাচ্ছে না।

(৪)EMPA-REG OUTCOME- এক যুগান্তরকারী গবেষণা
(Empagliflozin)Cardiovascular Outcome Event Trial in Type 2 Diabetes Mellitus Patients২০১৫ সালে সবচেয়ে সাড়া জাগানো গবেষণা (Empagliflozin) Cardiovascular Outcome Event Trial in Type 2 Diabetes Mellitus Patients-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।এই গবেষণায় যে সব  টাইপ ২ ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগীদের নিশ্চিত হৃদরোগ রয়েছে তাদের চিকিৎসায় রক্তে গ্লুকোজ কমানোর নতুন ওষুধ এম্পাগ্লিফ্লোজিন(empagliflozin) [Jardiance, Boehringer Ingelheim/Lilly]ব্যবহার করা হয়েছে। এম্পাগ্লিফ্লোজিন সোডিয়াম গ্লুকোজ কো-ট্রান্সপোর্টার-২(SGLT-2)নামে পরিচিত এক ধরণের রিসেপ্টর বা গ্রাহক অণুর ওপরে কাজ করে। গবেষণার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে এম্পাগ্লিফ্লোজিন ব্যবহারকারীদের হৃদরোগজনিত মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে কম। এই প্রথম ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর কোন গ্লুকোজ কমানোর ওষুধ ব্যবহার করে হৃদরোগে সুফল পাওয়া গেল। এর আগের অন্যান্য ওষুধে প্রকৃত পক্ষে তেমন কোন সুফল লাভ করা সম্ভব হয়নি।বিভিন্ন মহলে এই ফলাফল খুবই সাড়া জাগালেও মূল গবেষকগণ এ সম্পর্কে সতর্ক আশা প্রকাশ করেছেন এবং মনে করছেন ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগের জন্য এটা একটি সুখবর হলেও, এ সম্পর্কে আরও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।
      
(৫) সাইকোট্রপিক ওষুধ নরহত্যার প্রবণতা বাড়ায়
একটু অবাক হওয়ার মতোই তথ্য। এতদিন ধারণা করা হতো মানসিক রোগের জন্য সাইকোট্রপিক ওষুধ খেলে অনেকের বিপজ্জনক আচরণের সম্ভাবনা থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে বিষণ্ণতারোধক ওষুধ, বেনজোডায়াজেপিন এবং বিভিন্ন ধরণের ব্যাথানাশক ওষুধ খেলে নরহত্যার মতো মারাত্মক প্রবণতাও দেখা দিতে পারে।বিষণ্ণতারোধক ওষুধ ব্যবহার করলে আসলেই নরহত্যার প্রবণতা বাড়ে কিনা তা দেখার জন্য সুইডিশ গবেষকগণ ২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৯৫৯ জন নরঘাতক দাগী আসামীর ওপর পর্যবেক্ষণ করেছেন। আর এদের সঙ্গে তুলনা করার জন্য বেঁচে নেওয়া হয়েছে প্রায় দশ হাজার সাধারণ নাগরিককে। ১৯৯৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এদের সকলের ওষুধ ব্যবহারের ইতিহাস খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে বিষণ্ণতারোধক ওষুধ ব্যবহারে নরহত্যার প্রবণতা ৩১% এবং বেনজোডায়াজেপিনে ৪৫% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। সবচেয়ে আশংকার বিষয় হচ্ছে নারকোটিক এনং নন-নারকোটিক বেদনানাশক ওষুধ ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই প্রবণতা দুই  থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু যে অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ নিয়ে আমাদের এত আশংকা, সেটার ব্যবহারের সঙ্গে আসলে নরহত্যার প্রবণতার জোরালো কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। সুতরাং গবেষকদের বক্তব্য হচ্ছে যাদের অপরাধ করার ইতিহাস রয়েছে তাদের চিকিৎসার সময় সাইকোট্রপিক ওষুধ ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।

(৬)হৃদরোগের গবেষণায় অ্যাপ ব্যবহার
স্মার্ট ফোন অ্যাপের সাহায্যে হৃদরোগের গবেষণা ছিল ২০১৫ সালের একটি নতুন বিষয়। গত মার্চ মাসে স্মার্ট ফোন অ্যাপের সাহায্যে হৃদরোগের ওপর একটি গবেষণা শুরুর ২ সপ্তাহের মধ্যে ৪০,০০০ মানুষ সেখানে অংশগ্রহণ করার জন্য নাম লেখায়। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহায়তায় হৃদরোগের সুস্থতা রক্ষায় শরীরচর্চার ভূমিকা নিয়ে এই গবেষণার আয়োজন করেন। এজন্য তারা MyHeart Counts নামে একটি ফ্রি স্মার্ট ফোন অ্যাপ তৈরি করেছেন। ১৮ বছরের বেশী বয়সী যে কোন ব্যক্তি আই ফোন ৫এস, ৬ কিংবা ৬প্লাস-এর সাহায্যে এটা ডাউন লোড করে এই গবেষণায় অংশ গ্রহণ করতে পারেন।

(৭)স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং-এর নতুন নীতিমালা
২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করার নীতিমালা নবায়ন করেছে। আগে মহিলাদের বয়স ৪০ বছর হলে স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য ম্যামোগ্রাম করার পরামর্শ দেওয়া হতো। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে ৪৫ বছর বয়স হওয়ার পরে তা করতে হবে। আর বয়স ৫৫ হয়ে গেলে প্রতি ২ বছর অন্তর ম্যামোগ্রাম করলেই চলবে। দেখা যায় ৫০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী মহিলাদের স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাম করলে স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ কমান যায়।

(৮)PCSK9 Inhibitors- উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল চিকিৎসার জন্য নতুন ওষুধ
এ বছর মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন(FDA)কোলেস্টেরল কমানোর দুটি নতুন ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে। এই দুটি ওষুধের নাম- alirocumab (Praluent, Sanofi/Regeneron) এবং evolocumab (Repatha, Amgen)। এরা proprotein convertase subtilisin kexin 9 (PCSK9) inhibitors। প্রচলিত স্ট্যাটিনজাতীয় ওষুধের থেকে এদের কার্যক্রমের ভিন্নতা রয়েছে। নতুন ওষুধের সাহায্যে কোলেস্টেরল কমানো আর সহজ হবে মনে করা হচ্ছে। তবে কোলেস্টেরল কমানোর নতুন ওষুধের দাম নিয়ে অনেকেই সমালোচনামুখর।

(৯)সমলিঙ্গের বিয়ে নিয়ে মার্কিন সুপ্রীম কোর্টের রায়ের প্রতি স্বাস্থ্য সংস্থাসমূহের জোরালো সমর্থন
মার্কিন সুপ্রীম কোর্ট গত ২৬ জুন সমলিঙ্গের মধ্যে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে আইনগত বৈধতা দান করেছে। ১৯৯৬ সালে মার্কিন কংগ্রেস এবং প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সম্মতিক্রমে সমলিঙ্গের বিয়ে আইনগত ভাবে নিষিদ্ধ ছিল। প্রায় দুই দশক ধরে আন্দোলন করে সমকামীরা শেষ পর্যন্ত তাদের দাবী আদায়ের পথে সুপ্রীম কোর্টের সমর্থন আদায় করেছে। এতদিন আন্দোলনের মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬ টি রাজ্যে কোন না কোন ভাব সমলিঙ্গের  বিয়ে বৈধ ছিল। নতুন আইনের ফলে সবকয়টি রাজ্যেই তা  বৈধতা পাবে। এর আগে দুনিয়ার আরও ২০টি দেশে সমলিঙ্গের মধ্যে বিবাহ বন্ধন আইনগত বৈধতা দান করা হয়েছে।
মার্কিন সুপ্রীম কোর্টের নতুন পাশ করা আইনের ফলে এখন সমলিঙ্গের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ দম্পতিরা স্বাভাবিক নারীপুরুষের বিয়ের মতোই আইনী সুবিধা পাবে, সরকারী নথিপত্রে তাদের জন্ম-মৃত্যুর হিসেব রাখা হবে এবং উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি অর্জনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অধিকাংশ মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সুপ্রীম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন, আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স এবং আমেরিকান কলেজ অব ফিজিসিয়ানস সরাসরি এই রায়ের পক্ষে বিবৃতি প্রদান করেছে।
আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন মনে করছে এই রায়ের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে  নাগরিকদের মধ্যে “বৈষম্য এবং অসাম্য”  দূর হবে এবং আমেরিকানদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এটা ভালো হবে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স অনেক দিন যাবত সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতা দানের দাবী সমর্থন করে আসছিল। তারা মনে করেন সমলিঙ্গের দম্পতিদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কোন বিজ্ঞানসম্মত কারণ নেই। আমেরিকান কলেজ অব ফিজিসিয়ানসের প্রেসিডেন্ট সুপ্রীম কোর্টের রায়কে “ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত” হিসেবে অভিনন্দন জানিয়েছেন।  আমেরিকান কলেজ অব ফিজিসিয়ানস মনে করে এই রায়ের ফলে সকল মার্কিন নাগরিকের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল। উল্লেখ্য আমেরিকান কলেজ অব ফিজিসিয়ানস তাদের এই বছরের বার্ষিক সম্মেলনে লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল এবং ট্রান্সজেন্ডার (LGBT) রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে বৈষম্য এবং  স্টিগমা (stigma)  দূর করার জন্য অত্যন্ত জোরালো দাবী তুলেছিল।

(১০) অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু রোধে ওবামা প্রশাসন
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর ক্রম বর্ধমান সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য ২০১৫ সালের মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রথম জাতীয় পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এজন্য তিনি ২০১৬ সালের বাজেটে ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছেন ।এটা একটি অভূতপূর্ব ঘটনা। এই পরিকল্পনার পাঁচটি মূল লক্ষ্যঃঅ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু বৃদ্ধি রোধ করা, এজন্য সার্ভিলেন্স জোরদার করা, শনাক্ত করার পরীক্ষা উন্নত করার চেষ্টা, নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিস্কার করা এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো। মার্কিন রোগ প্রতিরোধ সংস্থার হিসেব অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ২৩,০০০ মানুষ মারা যায়; ২০ লাখ রোগ সংক্রমণের ঘটনা ঘটে এবং এর জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হয়।