ওষুধ হিসেবে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের সফলতার কোন তুলনা নেই। কয়েক দশক ধরে এটা প্রেসক্রিপশনে
সর্বাধিক লেখা ওষুধ। মূলত দুটো কারণে এটা হয়েছেঃ ডিসপেপসিয়ার চিকিৎসায় এটি
ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত; আর হৃদরোগে অ্যান্টিপ্লাটিলেট ওষুধের সঙ্গে পাকস্থলি থেকে কোন
ধরণের রক্তক্ষরণ প্রতিরোধের জন্য এটা অবশ্যই ব্যবহার করা হয়। সুলভ এবং সহজলভ্য
হওয়ার কারণে অনেকেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এটা ব্যবহার করে থাকেন। বাংলাদেশসহ অনেক
দেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়াও এটা দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। এতদিন মনে করা হতো প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর
খুবই নিরাপদ ওষুধ; এর তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু এখন বাস্তবতা আর সে
রকম মনে হচ্ছে না। দিনে দিনে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে চলেছে। এই তালিকায় সর্বশেষ
যুক্ত হয়েছে ক্রনিক কিডনি রোগের সমস্যা। সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে
দীর্ঘসময় প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করলে ক্রনিক কিডনি রোগ হতে পারে। Atherosclerosis Risk in Communities(ARIC) study-তে অংশগ্রহণকারী প্রায়
১০ হাজারের বেশী রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে এদের মধ্যে যারা প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর
ব্যবহার করেছেন তাদের মধ্যে ক্রনিক কিডনি রোগের হার ৫০ শতাংশ বেশী। অন্যান্য
নির্ভরযোগ্য পর্যবেক্ষণ থেকেও দেখা যাচ্ছে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর
ব্যবহার করলে আসলেই কিডনির সমস্যা বেশী হয়ে থাকে। প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর
ব্যবহার করলে তুলনামূলকভাবে স্বল্পমেয়াদী কিডনির সমস্যাও বেশী হয় এবং রক্তে
ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। মনে করা হচ্ছে এই দুটি কারণেই শেষ পর্যন্ত ক্রনিক
কিডনি রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
এ
পর্যন্ত প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহার করার ফলে যে সকল গুরুতর সমস্যার নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে তার
পূর্ণ তালিকা হচ্ছেঃ ১) ক্রনিক কিডনি রোগ হওয়ার ৫০% সম্ভাবনা বেড়ে যায় (Lazarus
et al, 2015) ২) স্বল্পমেয়াদী কিডনি রোগের
সম্ভাবনা ১৫০% বেড়ে যায় (Antoniou et al, 2015) ৩)অ্যাকিউট ইন্টারস্টিসিয়াল নেফ্রাইটিসের প্রকোপ দ্বিগুণ কিংবা তিন গুন
বৃদ্ধি পায় (Antoniou et al, 2015) ৪) রক্তে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি বা হাইপোম্যাগনেসিমিয়া হওয়ার প্রবণতা ৪৩% বেড়ে যায় (Cheungpasitporn et al, 2015) ৫) হার্ট
অ্যাটাকের হার ১৬% বেশী এবং হৃদরোগের
কারণে মৃত্যুহার দ্বিগুণ হওয়ার প্রমাণ রয়েছে () ৬) অধিক হারে ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিলি(Clostridium difficile) নামে পরিচিত
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটার হার ৭৪% বেড়ে যায় (Kwok et al, 2012) ৭) নিউমোনিয়ার
সম্ভাবনা ৫% থেকে ৩৪% বেড়ে যায় (Filion
et al, 2014 এবং Eom et al, 2011) এবং ৮) হাড়
ভেঙ্গে যাওার প্রবণতা ৩৩% বেড়ে যায় (Zhou
et al, 2015)।
এত
রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়ার ফলে গবেষকগণ এখন মনে করছেন প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের
ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করার সময় এসেছে।
তথ্যসূত্রঃ
১) Lazarus B, Chen Y, Wilson FP, et al.
Proton pump inhibitor use and the risk of chronic kidney disease. JAMA Internal
Medicine. 2016:238-46.
২) Schoenfeld
A, Grady D. Adverse effects associated with proton pump inhibitors. JAMA
Internal Medicine. 2016:1-3.
Good writings !I do very much appreciate it 1
ReplyDelete