আমরা সব সময়
শুনি, বিয়ে হচ্ছে দিল্লী কা লাড্ডু ; যে খায় সে পস্তায় যে না খায় সেও। কিন্তু এখন মনে হয় বিবাহিতরা আনন্দিত বোধ করতে পারেন। সাম্প্রতিক একটি পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে বিবাহিত
দম্পতিদের স্ট্রোক এবং হৃদরোগ কম হয়। কিন্তু যারা
একা থাকেন কিংবা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন তাদের বেশী স্ট্রোক এবং হৃদরোগ হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ লাখ মানুষের ওপর পর্যবেক্ষণ করে গবেষকগণ এই পুরনো কথাটি
আবার নতুন করে বললেন। এর আগেও বিবাহিত এবং অবিবাহিতদের মধ্যে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের
পার্থক্য নিয়ে অনেকেই গবেষণা করেছেন। কিন্তু এত বিপুল সংখ্যক মানুষের ওপরে আগে
কখনও পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। ২০১৪ সালের আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির বৈজ্ঞানিক
অধিবেশনে এই ফলাফল জানানো হয়েছে। পর্যবেক্ষণকৃত অংশগ্রহণকারীদের ৬৯ শতাংশ বিবাহিত, ১৩ শতাংশ বিধবা, ৯ শতাংশ তালাক প্রাপ্ত এবং ৮
শতাংশ একা থাকেন।
সার্বিক ফলাফলে
দেখা যাচ্ছে বিবাহিতদের মধ্যে করোনারী হৃদরোগ, স্ট্রোক, অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিজম
এবং অন্যান্য রক্ত নালীর রোগ কম হয়ে থাকে। গবেষকগণ বলছেন বিবাহিত দম্পতিদের সবরকমের
রোগই আসলে অবিবাহিতদের চেয়ে কম হয়। কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদ, বিধবা কিংবা বিপত্নীক হলে
সবরকম রোগের প্রকোপই বেড়ে যায়। আমরা হৃদরোগের ঝুঁকি বিচার করার জন্য প্রচলিত ঝুঁকি
সমূহ (যেমনঃ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ধূমপান ইত্যাদি) নিয়ে বেশী
চিন্তা করি। এই গবেষণার ফলাফল মানসিক উপাদানসমূহের গুরুত্ব পুনরায় তুলে ধরল। বিষণ্ণতা,
শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং সামাজিক সমর্থন- এধরণের বিষয়গুলো
সম্পর্কেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিয়ে করলে উপকার কি? এর সরাসরি কোন উত্তর
না পাওয়া গেলেও মনে করা হচ্ছে, বিবাহিতরা খাওয়া দাওয়া এবং শরীর চর্চার ব্যাপারে
যত্নশীল থাকেন, অসুখ-বিসুখ হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন এবং ওষুধ সেবনের বিষয়ে
দম্পতিরা বেশী সচেতন থাকেন। বিবাহিত দম্পতিদের রক্তনালীতে প্রদাহের পরিমাণ কম থাকে।
কেন কম থাকে তা জানা না গেলেও, এ কারণেও বিবাহিতদের স্ট্রোক এবং হৃদরোগ কম হয়ে
থাকতে পারে।
No comments:
Post a Comment