দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ এবং ঘুমের ওষুধ সেবন করা নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তা দেখা
দিয়েছে। এখন জানা যাচ্ছে এধরনের ওষুধ সেবন
করলে অকাল মৃত্যুর হার বেড়ে যায়।
এক লাখেরও বেশী মানুষের ওপর ৭ বছর পর্যবেক্ষণের পর বলা হয়েছে যে দুশ্চিন্তা
নাশক ওষুধ সেবন করলে অকাল মৃত্যুর হার সাধারনের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে যায়।
বেনজোডায়াজেপিন জাতীয় ঘুমের ওষুধ এবং তিনটি "Z drugs" – zaleplon, zolpidem, and
zopiclone–এর ক্ষেত্রে ওষুধের
মাত্রার সঙ্গে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এর অর্থ দুশ্চিন্তানাশক এবং
ঘুমের ওষুধ সেবন করতে হলে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে এবং উপযুক্ত চিকিৎসকের পরামর্শ
ছাড়া কখনই এধরনের ওষুধ গ্রহণ করা উচিৎ নয়।
শুধুমাত্র ব্রিটেনেই ২০১১-২০১২ সালে এক কোটি ষাট লাখেরও বেশী প্রেসক্রিপশনে
দুশ্চিন্তানাশক ও ঘুমের ওষুধ লেখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতি দশটি প্রেসক্রিপশনের
ছয়টিতে বেনজডায়াজেপিন এবং প্রতি দশটি প্রেসক্রিপশনের তিনটিতে জেড ড্রাগস লেখা
হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী লেখা হয়েছে ডায়াজিপাম (৪৮%)। এরপরই রয়েছে
টেমাজিপাম(৩৫%) এবং জোপিক্লোন(৩৪%)। অনেক রোগী এ জাতীয় একাধিক ওষুধ সেবন করে
থাকেন। পর্যবেক্ষণের মূল ফলাফলে দেখা যায় যারা ঘুমের ওষুধ কিংবা দুশ্চিন্তা কমানোর
ওষুধ সেবন করেন তাদের মৃত্যুহার সাধারণ মানুষের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশী।
এদের অনেকেই ধূমপান করেন, দুশ্চিন্তা
কিংবা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত, ইনসমনিয়ায় ভুগছেন এবং অন্যান্য জটিল রোগে
আক্রান্ত। এসকল ঝুঁকি বিবেচনা করার পরেও ওষুধ গ্রহণের ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে। এটি মূলত
পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা হওয়াই এই ফলাফলকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু
এরচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বড় পর্যবেক্ষণ ছাড়া এটাকে অস্বীকারও করা যাচ্ছে না। অতএব সাধারণ মানুষের জন্য একটিই
বার্তা; আর তা হচ্ছে বিনা প্রয়োজনে
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ সেবন না করাই উত্তম।
তথ্যসূত্রঃ Weich S ,Pearce HL ,Croft P ,Singh S ,Crome I
,Bashford J ,et al. Effect of anxiolytic and hypnotic drug prescriptions on
mortality hazards: retrospective cohort study. BMJ 2014; 348:g1996
No comments:
Post a Comment