ছায়ার ভাড়াঃ একাল
একদা একদেশের রাজধানীর নাম ছিল
ঢাকা। গাছপালার ছায়ায় ঢাকা ছিল বলেই এই নাম রাখা হয়েছিল কিনা জানা যায় না। তবে সেই
ঢাকা এক সময় খুবই বড় আধুনিক শহরে পরিণত হল। কিন্তু হারিয়ে গেল সবুজ বৃক্ষ আর লতাপাতা।
ঢাকার পথপ্রান্তর ঢেকে গেল ইট-পাথরের দালান-কোঠায়।
একদিন এক মুসাফির ঢাকায় বেড়াতে
এলেন।
তখন গ্রীষ্মকাল। ঢাকার পথে হাঁটতে
হাঁটতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। কিন্ত বিশ্রাম নেওয়ার মতো কোন গাছ খুঁজে পাচ্ছিলেন
না। হোটেলে যাওয়ার মতো টাকা নেই,
পরিচিত কোন বন্ধু-বান্ধবও নেই। তাই তিনি ঠিক করলেন একটি দালানের ছায়ায় বসে কিছুক্ষণ
বিশ্রাম নিবেন। কিন্তু দালানের ছায়ায় বসতে না বসতেই বাড়ীর মালিক এসে বললেন, “ভাড়া
দেন”।
মুসাফির অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“মহাশয়, কিসের জন্য ভাড়া দেব?”
বাড়ীর মালিক বললেন, “এইযে আপনি
আমার বাড়ীর ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এটার জন্য ভাড়া দেন”।
ছায়ার ভাড়াঃ সেকাল
অনেক অনেক দিন আগের কথা। এক
মুসাফির গ্রীসে বেড়াতে গিয়েছেন। তার এথেন্স থেকে মেগারা যাওয়ার ইচ্ছে হল। কিন্তু
যাওয়ার কোন বাহন নেই। আবার এতদূর হেঁটে যাওয়াও তার পক্ষে সম্ভব নয়। অনেক
খোঁজাখুঁজির পর তিনি এক গাধা ভাড়া করলেন। গাধার মালিক তাকে চড়িয়ে নিয়ে যেতে রাজী
হল। মুসাফির এজন্য তাকে খুবই কৃতজ্ঞতা জানালেন।
তখন গ্রীষ্মকাল। পথে কাঠফাটা রোদ।
অচিরেই তারা রোদে আর গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। তাই এক জায়গায় যেয়ে মুসাফির বিশ্রাম
নেওয়ার জন্য গাধা থেকে নামলেন। সেখানে আশেপাশে কোন গাছপালাও নেই, বাড়ী ঘরও নেই।
তাই ভেবেচিন্তে ঠিক করলেন তিনি গাধার ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিবেন। কিন্তু গাধার
মালিকও ওখানে বসে বিশ্রাম নিতে চাইল। মুসাফির বললেন, “আমি গাধা ভাড়া নিয়েছি। অতএব
গাধার ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া আমার অধিকার”। গাধার মালিকও ছাড়ার পাত্র নয়। তিনি
বললেন, “মহাশয়, আমি গাধা ভাড়া দিয়েছি। গাধার ছায়াতো ভাড়া দেইনি”। এই নিয়ে দুজনের
মধ্যে তুমুল বাক-বিতন্ডা। শেষপর্যন্ত হাতাহাতি, মারামারি শুরু হল।
এদিকে গাধা ছাড়া পেয়ে এক-পা দু-পা
করে ওখান থেকে পালিয়ে গেল।
(এটা নিছক গল্পমাত্র।এখানে কোন
নীতিবাক্য সন্ধান করার প্রয়োজন নেই।)
No comments:
Post a Comment