শরীর ও মন নিয়ে লেখালেখি

Tuesday 11 February 2014

মেয়েদের অর্গাজম এবং বেদনানাশক ওষুধ

মেয়েদের অর্গাজম বা রাগ মোচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও এ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তথ্যের অভাব রয়েছে। যৌনতা এবং প্রজনন সম্পর্কে গবেষণার জন্য বিখ্যাত কিনসে ইন্সটিটিউটের একজন গবেষক মনে করেন, এ সম্পর্কে প্রকৃত তথ্যের চেয়ে কাল্পনিক মনগড়া গাল-গল্পের পরিমাণই বেশী।
ধারণা করা হয় বছরে প্রতি চারজন মহিলার মধ্যে একজন কোন না কোন সময়ে অর্গাজম বা চরম পুলক হয় না। শতকরা ৫ থেকে ১০ জন মহিলা সারা জীবনে একবারও চরম পুলকের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন না।    
আমেরিকার নিউ জার্সির ব্যারি কমিসারুক মেয়েদের অর্গাজম নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ফাংশনাল এম আর আই-এর (fMRI) সাহায্যে মস্তিস্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছেন। অর্গাজমের সময়ে মস্তিস্কের সম্মুখভাগের প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্সের কার্যকলাপ নিয়ে তার প্রধান আগ্রহপ্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স আমাদের সচেতন বিচার বিবেচনার সঙ্গে সম্পর্কিত। কমিসারুক সম্প্রতি দেখাতে পেরেছেন যে অর্গাজমের সময় মেয়েদের প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স অত্যন্ত সক্রিয় থাকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে কেউ কল্পনায় কিংবা ফ্যান্টাসির মাধ্যমে নিজেকে উত্তেজিত করে অর্গাজমের পর্যায়ে গেলেও তার প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর অর্থ প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্সকে কল্পনা কিংবা অন্য কোন ভাবে উদ্দীপিত করে বাস্তব যৌন মিলন ছাড়াও অর্গাজম বা রাগ মোচন ঘটানো সম্ভব। এখন বিজ্ঞানীদের ধারণা অর্গাজম আসলে প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স থেকে উদ্ভুত চেতনার একটি বিশেষ অবস্থা।
তার এই গবেষণাকে সকলে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। কারণ অর্গাজমের সঙ্গে মস্তিস্কের ভূমিকা আসলে কি তা বের করতে পারলে যে সকল মহিলা কখনই অর্গাজমের আনন্দ লাভ করতে পারেন না,তাদের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।  এ ছাড়া ক্রনিক ব্যাথার চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এটা ভূমিকা রাখবে। কারণ দেখা যায় মেয়েদের চরম পুলক হলে বিভিন্ন ধরণের ব্যাথা-বেদনা কিছু সময়ের জন্য হলেও একেবারে থাকে না। এ জন্য বলা হচ্ছে রাগ মোচন বা অর্গাজম একটি শক্তিশালী বেদনানাশক ওষুধ। কমিসারুক মনে করছেন অচিরেই মস্তিস্কের যে অংশ উদ্দীপিত হওয়ার ফলে চরম পুলকের অনুভুতি জাগে এবং ব্যথা বেদনা দূর হয়ে যায়, সেটাকে কৃত্রিম উপায়ে উদ্দীপিত করে ব্যথা কমানোর জন্য নতুন ধরণের বেদনানাশক ওষুধ আবিস্কার করা সম্ভব হবে।

[এফ এম আর আই-এর ফিল্মে অর্গাজম(A) এবং ব্যথার(B) সময় মস্তিস্কের কার্যকলাপের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। এটি নিউ সায়েন্টিস্ট পত্রিকা থেকে সংগৃহীত।]    

No comments:

Post a Comment