বিশ্বের অনেক দেশে ধূমপানের প্রবণতা কমেছে। কিন্তু
তারপরও মোট ধূমপায়ীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
২০১২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিদিন ১৮৭টি দেশে ৯৬৭ মিলিয়ন মানুষ ধূমপান করে। উল্লেখ্য ১৯৮০ সালে এই সংখ্যা ছিলো ৭২১ মিলিয়ন।
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে ধূমপায়ীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। গত ৫০ বছরে পৃথিবীর জনসংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ফলে ধূমপানে অভ্যস্ত মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। হিসেবে দেখা যায় ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ধূমপানের প্রবণতা কমছিল ।
কিন্তু ২০১০ সাল থেকে পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের হার বেড়ে চলেছে। এর জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়াসহ আরো বেশ কিছু দেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে ২০১২ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬.২৫ ট্রিলিয়ন সিগারেট পান করা হয়েছে; অর্থাৎ প্রত্যেকে ২০ শলা করে ধূমপান করেছে। ১৯৮০ সালে এই সংখ্যা ছিলো ৪.৯৬ ট্রিলিয়ন।
বর্তমানে ১০ জন পুরুষের মধ্যে ৩ জন এবং ২০ জন নারীর মধ্যে ১ জন ধূমপান করেন; ১৯৮০ সালে এই হার ছিলো ১০ জন পুরুষে ৪ জন এবং ১০ জন নারীর মধ্যে একজন।
বিশ্বের যেসব দেশে ধূমপানের ব্যাপকতা রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ওপরে আছে পূর্ব তিমুরের নাম। দেশটির ৬১ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ধূমপান করেন। এরপরেই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। আর সবচেয়ে নিচে আছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা।সেখানে প্রতিদিন মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ ধূমপান করেন।
ধূমপানের অভ্যাস থেকে জনগণকে ফিরিয়ে আনতে, বন্ধ করতে বা কখনো ধূমপান না করার জন্য উৎসাহ দেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে নরওয়ে, সুইডেন, কানাডা, ও মেক্সিকো।
পঞ্চাশ বছর আগে আমেরিকার সার্জন জেনারেল
ধূমপান প্রতিরোধের সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। তখন বলা হয়েছিল ধূমপান করলে ফুসফুসের
ক্যানসার হয়। পঞ্চাশ বছর পরে আজ আমরা জানি ধূমপান শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গেই
কোন না কোন ক্ষতি করে। এমন কি পরোক্ষ ধূমপানও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। পঞ্চাশ বছরে
ধূমপান প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হলেও এখনও অনেক কিছু করার রয়েছে।
কিন্তু বর্তমান প্রকাশিত পরিসংখ্যানের পড়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, আমরা কি তা করতে পারবো? আমাদের
কি আসলে সে সদিচ্ছা আছে?
No comments:
Post a Comment